গোপালগঞ্জে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরী পেলেন ২৯ জন
নরুন্নবী গাজী ৩ বার সেনাবহিনীর সদস্য ও ২ বার ফায়ার সার্ভিসের কর্মী পদে চাকুরীর জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু কোনবারই হয়নি চাকুরী। তবে এবার প্রথমবারের মত পুলিশের কনেস্টবল পদে দাঁড়িয়ে মাত্র ১২০ টাকায় পেয়েছেন চাকরী।
আর চাকুরীর ক্ষেত্রে তো নারীর কথা ভিন্ন। এখনো চাকুরীর ক্ষেত্রে নারীদের সেভাবে গ্রহণ করা না হলেও সকল প্রতিকুলতাকে ছাড়িয়ে চাকরী পেয়েছেন আশামনি।
তাদের মত আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় শেষে চূড়ান্তভাবে ২৯ জন তরুন তরুনী মাত্র ১২০ পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরী পেয়েছেন।
গোপালগঞ্জে কোন তদবির-সুপারিশ ছাড়াই শতভাগ স্বচ্ছতায় মাত্র ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ২ টাকায় আবেদন ফরম খরচ করে পুলিশ কনেস্টবল পদে চাকরী পেয়েছে ২৯ জন তরুন তরুনী। প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার পর তাদেরকে পুলিশ সদস্য হিসেবে বরণ করে নেন পুলিশ সুপার।
জানা গেছে, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে গোপালগঞ্জে জেলার ৫টি উপজেলা থেকে ২৯ টি কনস্টেবল পদের বিপরীতে ১ হাজার ৩০৪ জন বেকার তরুণ-তরুণীর আবেদন যাচাই বাছাই, শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা শেষে ২৬৬ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ২ টাকায় আবেদন ফরম দিয়ে গত ২৮ মার্চ ২৬৬ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিলেও নকল করার দায়ে ২ জন বহিস্কার হন। সেখান থেকে ৫৫ জন মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় উর্ত্তীন্ন হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় শেষে চূড়ান্তভাবে সাধারণ, মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশ পোষ্য কোটায় ২৯ জন তরুন তরুনী পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরীর সুযোগ পান। তদবির-সুপারিশ ছাড়াই শতভাগ স্বচ্ছতায় মাত্র ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে চাকরী পান তারা।
দুপুরে কনেস্টবল পদে উর্ত্তীন্ন হওয়া ২৯ জন তরুন তরুনীর নাম ঘোষনা কারার পর তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করেন নেন পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা।
চাকরীপ্রাপ্ত নরুন্নবী গাজী আরো বলেন, চাকরী পাওয়ায় আমি আমার মা-বাবাকে ধন্যবাদ জানায়। তারা আমাকে সাহস দিয়েছেন। এছাড়া পুলিশ সুপারকেও ধান্যবাদ জানাই। কারন তিনি স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগে দিয়েছেন। আমি দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে চাই।
চাকরী প্রাপ্ত সুমি গাইন বলেন, চাকরীসহ প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীদের বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে হয়। সমাজ কখনো নারীরা চাকরী করবে এটা মেনে নিতে পারে না। তারপরেও আমি মাত্র ১২০ টাকায় চাকরী পেলাম। আমি আমার মা, বাবা সহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আমার মেধা, শ্রম আর সততা দিয়ে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করবো।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা বলেন, ১ হাজার ৩০৪ জনের মধ্যে থেকে ২৯ জনকে বাছাই করা খুবই কষ্টসাধ্য। আমার অন্যান্য কর্মকর্তারা আমাকে এ কাজে সহায়তা করেছেন। তাদের সহায়তায় আমি মেধাবী ও যোগ্যদের বাছাই করতে সক্ষম হয়েছি। এই চাকুরীপ্রাপ্ত ২৯ জন তরুন তরুনীরা মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশ ও সাধারন মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন পুলিশ সুপার।
নতুন সময়/এএম
গোপালগঞ্জ, পুলিশ, চাকরী, কনস্টেবল, মুক্তিযোদ্ধা