বাঞ্ছারামপুরের ওয়াই সেতুতে নষ্ট সড়কবাতি, অন্ধকারে আতঙ্ক আর পর্যটকহীনতা
                                তিতাস নদীর ওপর নির্মিত বাঞ্ছারামপুর-হোমনা সংযোগ সেতু, যা স্থানীয়ভাবে 'ওয়াই সেতু' নামে পরিচিত, তা এখন নীরব-নিশ্চুপ। সন্ধ্যা নামলেই এই ৭৭১ মিটার দীর্ঘ ও ৮.১০ মিটার প্রস্থের সেতু ঘিরে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। বহুদিন ধরে সেতুর সড়কবাতিগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তেমনি পর্যটকদের আগমনও কমে গেছে।
২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন এই ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। শুরুতে দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন শতশত মানুষ ভিড় জমাতেন। গড়ে উঠেছিল হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ফুচকা-চটপটির দোকান, এমনকি ঘোড়ায় চড়ার আয়োজনও। কিন্তু বর্তমানে সেতু এলাকায় সন্ধ্যার পর ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। মাদকসেবীদের আড্ডা, ছিনতাই ও সংঘর্ষের মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
সেতুতে চটপটি বিক্রেতা সোহেল মিয়া জানান, “আগে প্রচুর লোকজন আসতো। এখন বাতি না থাকায় সন্ধ্যার আগেই সবাই চলে যায়। বেচাকেনা প্রায় বন্ধ।” ঘোড়াচালক আবদুল করিম বলেন, “ঘোড়ায় চড়ার জন্য আগে মানুষ ভিড় করতো। এখন লোক কম হওয়ায় আয়ও কমে গেছে।” এক মুদি দোকানি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাতিগুলো এক বছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট। অথচ কেউ এগোচ্ছে না। এটা দুঃখজনক।”
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহরম মাস্টার জানান, “সেতুটি এলাকার অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল। সন্ধ্যায় বাতি জ্বলে উঠলে দৃশ্যটা ছিল অসাধারণ। এখন অন্ধকারে কেউ আসতে চায় না।”
স্থানীয় সাংবাদিক দেলোয়ার বলেন, “এই সেতু ঘিরে হোমনা ও বাঞ্ছারামপুরে পর্যটনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, তবে এটি হতে পারে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।”
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “নতুন বাতি স্থাপনের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।”
