সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান

আগামীতে সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য দলের সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন বিএনপিরর নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল মহানগরীতে জিলা স্কুল মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে এ আহবান জানান তারা।
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা কি এই দেশ দেখার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম? যে দেশে সাধারণ মানুষকে গুম, খুন, হত্যা, অন্যায় অবিচার করা হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ভারতের অভ্যন্তরে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তিনি দেশের প্রথম সারিতে থেকে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। দেশের প্রতি তার ভালবাসা থেকে সেদিন রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তার মতো একজন প্রকৃত সৈনিকের খেতাব বাতিল করতে চায় কিছু লোক। এই স্বাধীন দেশে আমরা এটা কখনো হতে দিব না।
তিনি বলেন, পাশের দেশ মিয়ানমারের সামরিক শাসন হয়েছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। বর্তমান সরকারের শাসন তো সেই স্বৈরশাসকের চেয়েও খারাপ। আমরা কয়জন রাজপথে নামতে নামতে পেরেছি?
বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধাদের এখন কেউ স্মরণ করে না। যুদ্ধের সময়ে দেশে মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৮০ হাজার, আর এখন হয়ে গেছে আড়াই লক্ষ। এটা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের বদৌলতে। আজকের এই সমাবেশে আসার সময় জায়গায় জায়গায় পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে, আটক করেছে, বাধা দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই প্রতিবাদ কোথায়? সেই প্রতিবাদের স্পোলিঙ্গতো আমি দেখতে পাচ্ছি না।এখনকার তরুণরা কি অবদান রাখছেন এই দেশের জন্য? তাই আসুন এখনই সময় এই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে নামার। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সমস্ত সিটি নির্বাচনগুলোকে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারেরর অধীনে নির্বাচন চাই, মাফিয়া সরকারের অধীনে নয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, বিচার বিভাগ আর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আলাদা কিনা সেটা জানতে চাই। আমরা নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ চাই এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন চাই।
খুলনা সিটি করপোরেশনের নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ৬ সিটি করপোরেশনের প্রার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ শুরু করেছি আমরা। মাফিয়া সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, দিন দিন জালিম সরকার স্বাভাবিক নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। কোন নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না। বর্তমান আওয়ামী সরকার বলে তারা দুর্ণীতির সঙ্গে আপোশ করে না কিন্তু তারা দুর্নিতীতে চ্যাম্পিয়ন।
ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে সমাবেশে আসার জন্য ঢাকা থেকে রওনা দেয়ার পর মাওয়া ঘাটে সরকার নির্লজ্জভাবে, ন্যাক্কারজনকভাবে ফেরি বন্ধ করে দেয়, কর্তৃপক্ষ অফিস বন্ধ করেই চলে যায়৷ আমাদের প্রায় ২৫ টি গাড়ি এখনো সেখানে রয়ে গেছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরাদ্ধের আন্দোলনে আছি। আমাদেরকে কোনো বাধায় আটকাতে পারবেনা।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে মাঠে আছেন, গত ১৩ বছর ধরে অত্যাচার, নির্যাতন, মামলা হামলার শিকার হয়ে যেভাবে মাঠে আছেন, আপনাদেরকে দেখে আমি আরও উজ্জীবিত হলাম৷ আপনারা আগামী আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিন। ইনশাল্লাহ বরিশাল থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন পাকাপোক্ত হবে৷
বরিশাল মহানগরের সাবেক মেয়র মজিবুর সারোয়ারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা আবুল হোসেন খান, ওবায়দুল আকরাম, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।