ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


বাজেট ‘জনগণের নয়’, ‘প্রত্যাখ্যান’ বিএনপির এমপিদের


২ জুলাই ২০২০ ০১:১১

জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ‘জনগণের বাজেট নয়’ উল্লেখ করে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।

বুধবার (১ জুলাই) জাতীয় সংসদের মূল গেটের সামনে বাজেট প্রতিক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তারা।

সূচনা বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, ‘গত ১০০ বছরে পৃথিবীতে এই দুর্যোগ মহামারি আমরা দেখিনি। গতকাণ আমরা দেখেছি সংসদে বাজেট পাস হয়েছে। এই বাজেট জনগণকে ফাঁকি দেয়ার জন্য। আমরা যারা মূল বিরোধী দল বিএনপির সংসদ সদস্য আছি, আমরা যাতে সংসদে এই বাজেট নিয়ে কথা না বলতে পারি, সমালোচনা করতে না পারি সেজন্য মাত্র একদিনের জন্য সাধারণ বাজেট আলোচনা করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন আলোচনাবিহীন বাজেট কখনো পাস হয় নাই। আজকে এই মহান সংসদের সামনে দাঁড়িয়ে বলছি, আমরা জনগণের পক্ষে এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি।’

বিএনপির আরেক সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘বিএনপির সাংসদদের মধ্যে আমাকে সংসদে খুব অল্প সময়ের জন্য বাজেট বক্তৃতায় কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। এই বাজেটের বক্তৃতায় এক পর্যায়ে স্পিকার আমার মাইক বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা বাজেট ঘোষণার আগে একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম যে, এই বাজেট অধিবেশন ভার্চুয়াল করার জন্য কিন্তু সেটা করা হয়নি। আমাদের সাংসদদের এই বাজেট প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই, যারা মহাজোটের শরিক তারাই বিরোধী দলে অংশগ্রহণ করছে। তার ফলে জনগণের যে সংকট সেটি সত্যিকার অর্থে সংসদে প্রতিফলিত হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে কয়েকজন সদস্য সেটা বলার চেষ্টা করি সেখানে আমাদের সঠিক সময়টুকু দেয়া হচ্ছে না। এই সংকটের মধ্যে যারা জাতিকে পরামর্শ দিতে চায় তাদেরকে সরকার তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। আমরা সংসদে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি জানিয়েছি এবং গোটা স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের কথা বলেছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে কোনও কথাই বলেননি। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অতিসত্তর করোনা মোকবিলার জন্য আমাদের রোডম্যাপ দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি এবং গতকাল যে অপ্রত্যাশিত এবং অকল্পনীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে সেটাও প্রত্যাখ্যান করছি।’

লিখিত বক্তব্যে বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাজেট অধিবেশন সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। এই অধিবেশনে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে বাজেটের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ জাতির স্বার্থেই খুব জরুরি। করোনাকালীন স্বাস্থঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেট অধিবেশন অতি সংক্ষিপ্ত করতে চেয়েছে সরকার। কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে এই অধিবেশন ডিজিটাল বা ভার্চুয়ালি করার প্রস্তাব দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। গত ১৫ই জুন অনির্ধারিতভাবে ২৩ জুন পর্যন্ত বর্তমান অধিবেশন মুলতবি করে মাত্র এক দিন (২৩ জুন) বাজেটের সাধারণ আলোচনা করা হয়েছে। এটা অকল্পনীয়। আমাদের বিশ্বাস করোনার মতো ভয়ঙ্কর একটা সংকটে যে যাচ্ছেতাই বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটার সমালোচনা এড়ানোর জন্যই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করে তড়িঘড়ি করে শেষ করতে চেয়েছে সরকার।’

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসেতো বটেই স্বাধীনতার পর এতটা গুরুত্বপূর্ণ একটা বাজেট এই জাতির জীবনে আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দেশ স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়েছে, সেটার কারণে অর্থনৈতিক সংকটকে মাথায় রেখে বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে, কিন্তু দেশের চরম অভ্যন্তরীণ সংকট এবং একই সাথে সারা পৃথিবীর সংকট মিলিয়ে এবারের মত পরিস্থিতি এই জাতির ইতিহাসে আর আসেনি। আমাদের মনে রাখতে হবে এমনিতেই চরম লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিল। করোনা আসার আগেই পুরো ২০১৯ সাল জুড়ে আমরা দেখেছি শুধুমাত্র রেমিট্যান্স ছাড়া সামষ্টিক অর্থনীতির আর সবগুলো সূচক যেমন রফতানি আয়, আমদানির পরিমাণ (বিশেষ করে মূলধনী যন্ত্রপাতি), বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ, বেসরকারি বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ ভোগ কমে যাচ্ছিল। এমনিতেই ভেঙে পড়া অর্থনীতির সাথে করোনার অভিঘাত যুক্ত হবার ফল হবে ভয়ঙ্কর। এই পরিস্থিতিতে যে অসাধারণ সৃজনশীলতা এবং আন্তরিকতা নিয়ে এই বাজেট দিয়ে এই বাজেট করা প্রণয়ন করা অত্যাবশ্যক ছিল, বলা বাহুল্য তার কিছুই হয়নি। বরং সব সময়ের মতো একটা প্রাক্কলিত জিডিপির ভিত্তিতে বাজেটের ব্যয়ের খাতগুলোর বরাদ্দ আনুপাতিকভাবে বাড়িয়ে যে বাজেট তৈরি করা হয়েছে সেটাকে প্রতিবারের মতো গতানুগতিকও বলা যায় না। এটা স্বপ্নবিলাস ও কল্পনাবিলাস।’

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘একেবারেই নতুন একটা পরিস্থিতিতে এই বাজেট ঠিক কেমন হওয়া উচিত, সেটার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ দিকনির্দেশনা সমাজের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে। অর্থনীতির থিংক ট্যাংক এবং অর্থনীতিবিদরা নানারকমভাবে সরকারকে পথ দেখাতে চেষ্টা করছেন। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন দল বিএনপি নামের দলটিকেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চেয়েছে। বিচারবহির্ভূতভাবে বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, গুম করেছে, অসংখ্য নেতাকর্মীকে জেলে নিয়েছে, হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে। দলটির চেয়ারপারসনকে দুই বছরের বেশি সময় মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ রেখেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও আছে বহু মিথ্যা মামলা। কিন্তু জাতির এই সংকটে বিএনপি তার ওপর এই অত্যাচারের কথা ভুলে সরকারের সাথে একসাথে কাজ করার চেষ্টা করেছে। বিএনপি আসন্ন বাজেটে কেমন হওয়া উচিত, সেটা নিয়েও আগাম প্রস্তাবনা দিয়েছিল ৯ জুন। এতে আমরা সুনির্দিষ্ট পুনরুদ্ধার পরিকল্পণা সমৃদ্ধ তিন বছরের একটি মধ্যমেয়াদি বাজেট রুপরেখা দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার বরাবরের মতো তার চরম কর্তৃত্ববাদী চরিত্র বজায় রেখে বিএনপির পরামর্শগুলো আমলে নেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সরকার যে বাজেট প্রস্তাবনা সামনে এনেছে, সেটা একমাত্র ক্ষমতাসীন দল ছাড়া আর কেউ কোনভাবেই একটা সংকটকালীন বাজেট হয়েছে বলে রায় দেয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি ক্ষেত্র থেকে বলা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট করোনার ফলে সৃষ্ট জীবন এবং জীবিকার সঙ্কট মোকাবিলায় আদৌ সক্ষম নয়। ফলে আগামী দিনগুলোতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। পুরো বাজেটটি নানা রকম স্ববিরোধীতা, অসামঞ্জস্যতায় পরিপূর্ণ।’

করোনাকালীন বাজেট হওয়ায় করোনার সঙ্গে খুব সরাসরি জড়িত কয়েকটি খাত নিয়ে বিএনপির এই সাংসদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতের বেহাল অবস্থার কথা আমরা জানতাম, কিন্তু করোনা এটাকে যাচ্ছেতাইভাবে প্রকাশ্য করেছে। স্বল্পমেয়াদে করোনা মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত প্রয়োজনীয় চিকিৎসাকর্মী নিয়োগের কোনও রূপরেখা বাজেটে নেই। স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ দিয়েছে এটা দিয়ে বর্তমান সংকট এবং ‘লকডাউন’ খুলে দেবার কারণে সামনের দিনগুলোতে যে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে সেটা কোনোভাবেই মোকাবিলা করা যাবে না। করোনার কারণে দেশের দারিদ্র্যসীমার নীচে মানুষের সংখ্যা যখন দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে তখন আগের বছরের বৃদ্ধির চাইতে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি কোনোভাবেই সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না। এই তুচ্ছ বরাদ্দ দেশকে এক দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনার খুব বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়া একটা খাত হলো কৃষি। এই সংকটের সময়ে ৯৫ শতাংশ কৃষকই সরকারি অথবা বেসরকারিভাবে কোনো ধরনের সহায়তা পাননি। এই পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেটেও কৃষকের জন্য কোনো সুখবর নেই। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তো বটেই করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া লক্ষ লক্ষ মানুষের আপৎকালীন কর্মসংস্থান হতে পারতো কৃষিতে, কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যুনতম মনযোগ দেয়া হয়নি কৃষিতে। সরকারের আর সব বাজেটের মতো এই বাজেটে লুটেরাদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে উল্লেখ করে রুমনি ফারহানা বরেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ যেরকম ঢালাওভাবে করা হয়েছে সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে আর কখনো হয়নি। এবার মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে।’

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই টাকার উৎস সম্পর্কে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। এই বাজেটে ব্যাংক খাতের ক্যান্সার হয়ে পড়া খেলাপি ঋণ কমানোর কোন পদক্ষেপ নেই। এই বাজেটে সরকারের ক্ষমতাশালীদের কমিশন পাবার শর্তে জনগণের টাকা কিছু লুটেরার হাতে তুলে দেবার কুইক রেন্টাল বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ করার কথা নেই। এই বাজেটে তেলের দাম তলানিতে পড়ে গেলেও তেলের দাম কমানো হয়নি। এই বাজেটে মোট রাজস্বে আয়করের হিস্যা বাড়েনি। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য নেই কোন উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। করোনা সংকটের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাতের একটা পর্যটন খাত নিয়ে দেয়া হয়নি একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও। এই দেশে সবচেয়ে দরিদ্র মানুষও যে মোবাইল ফোনে কথা বলে, ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেটা ব্যবহারের খরচ বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু শুল্ক কমানো হয়েছে ধনীদের ব্যবহার্য সোনার।’

বিএনপির এই সাংসদ বলেন, ‘করোনার সময়ে দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল যে মন্দা থাকবে তাতে মানুষের আয় এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়ে রাজস্ব আয়ে চরম ঘাটতি তৈরি হবে। তাই বলা যায়, এই ঘাটতি গিয়ে ঠেকবে প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকায়। ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারের মূল পদক্ষেপ হবে ঋণ করা। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের এই অকল্পনীয় পরিমাণ টাকা ধার করার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ একেবারে শূন্যের কোঠায় চলে আসবে, যা কর্মসংস্থানের পথ একেবারেই বন্ধ করে দেবে। এতেও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না। তাই সরকারকে বিপুল পরিমাণের নতুন টাকা ছাপাতে হবে। এই টাকা ছাপানো উচ্চ মূল্যস্ফীতি তৈরি করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে প্রচন্ডভাবে দুর্বল করে দেবে, যার ফল হবে মারাত্মক।’

তিনি বলেন, ‘এই বাজেট করোনার সময়ে বীভৎস স্বাস্থ্য সংকটে পড়া মানুষের নাভিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেবার বাজেট, এই বাজেট করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া কোটি কোটি অনাহারী মানুষকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ঠেলে দেয়ার বাজেট, এই বাজেট কৃষিকে ধ্বংস করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলার বাজেট, এই বাজেট দেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার না করে আরও গভীর মন্দায় ফেলে দেয়ার বাজেট, এই বাজেট দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে ফেলার বাজেট, এই বাজেট দেশের কর্মক্ষম বেকার মানুষকে এবং নতুন করে বেকার হওয়া মানুষকে বেকার রেখে দেয়ার বাজেট, সর্বোপরি এই বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটকারীদের আরও সুযোগ বৃদ্ধির বাজেট। একটা অনির্বাচিত, জনগণের কাছে ন্যুনতম জবাবদিহিতাহীন, আমলাচালিত, ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট সরকারের কাছে এমন বাজেটই প্রত্যাশিত। এই বাজেট আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির দুই সাংসদ মোশররফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম ও বিএনপি চেয়াপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।