এবার কি বলবেন আমাদের কমেন্টেটররা?

সিলেটের মাঠে অভিষেক টেস্টে মাত্র ১৪৩ রানে অলআউটের লজ্জা পেল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে দাঁড়াতেই পারেনি জিম্বাবুয়ে। তিন ম্যাচের সিরিজে তারা হোয়াইট ওয়াশ হয়েছে। টেস্ট সিরিজেও বাংলাদেশ তেমন কিছু করে করবে- এমনটা আশা করেছিলাম। কিন্তু যা অবস্থা তাতে সম্ভবত হার এড়াতে পারবে না বাংলাদেশ। এবার কি বলবেন আমাদের কমেন্টেটররা?
বাংলাদেশ এত অল্প রানে আলআউট হয়ে এক দিক দিয়ে বরং ভালোই হয়েছে। টিভি কমেন্টেটরদের মুখ বন্ধ হবে সম্ভবত! Bangadesh won but at home.বাংলাদেশে জিতেছে কিন্তু দেশের মাটিতে। তাদের মুখে প্রায়ই এমন আপত্তিকর কথা শোনা যায়। এমন কি আজও আট দশবার কথাটা শুনতে হলো। এবং তিনি বাংলাদেশি কমেন্টেটর! তিনি নয় বরং তারা। বাংলাদেশেদের দুজন কমেন্টেটর যারা এই সিরিজেও কমেন্টি করছেন, প্রকারন্তরে বাংলাদেশের জয়কে খাটো করছেন।
২০১৬ ও ২০১৭ যথাক্রমে ইংল্যান্ডও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু অসাধারণ ওই জয় দুটোকেও খাটো করেছিলেন তারা। বাংলাদেশ জিতেছে, কিন্তু দেশের মাটিতে। এমন কথা বারবার বলেছিলেন বাংলাদেশি এক কমেন্টেটর। একজনের বিদেশি কমেন্টেটরের মুখ থেকে এমন কথা না হয় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু দেশের কেউ যদি বাংলাদেশের এমন খাটো করেন, তা মনে নেওয়া কষ্টের।
তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা কী পরিসংখ্যান দেখে এসব কথা বলছেন? বরং পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যাবে, দেশের বাইরেও বেশ ভালে করছে টাইগাররা। হ্যাঁ, নিজ মাঠে সব দলই তুলনামূলক একটু বেশি শক্তিশালী। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়।
তবে আমার তো মনে হয়, অন্য অনেক দলের চেয়ে দেশের বাইরে বাংলাদেশের ভালো অর্জন আছে। বিদেশের মাঠে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম জয় পাকিস্তানের সাথে। এরপর অস্ট্রেলিয়া,শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকাসহ অনেক দলের সাথেই কিন্তু বিদেশের মাটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ চারে খেলা, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, এবার এশিয়া কাপের ফাইনাল- এমন অনেক বড় জয়গুলো কিন্তু দেশের বাইরে।
টেষ্টেও প্রথম সিরিজ জয় করেছে বিদেশের মাটিতে । এ কথা সত্য প্রতিটি দেশই নিজেদের মাঠে ভালো খেলে থাকে তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ তার নিজের মাটিতে ভালো খেলেছে এটাই স্বাভাবিক। অথচ দঃখ লাগে আমাদেরও দেশের একজন ইংরেজী ধারা ভাষ্যকার বার বার যখন বলেন ঘরে মাঠে বাংলাদেশ ভালো খেলেছে তখন দুঃখ লাগে।
পরিসংখ্যান বা রেকর্ড বুক এ কোনোদিনও এ লেখা থাকবে না যে, বিদেশের মাঠে তামিম ইকবাল ২০০ রান করেছে বা সাকিব আল হাসানের কোথায় রেকর্ড কোথায় হয়েছে । রেকর্ড হযেছে এটাই বড় কথা। দেশ ও বিদেশের মাঠে যেখানেই করুক, রের্কডবুক- এ একই কথা লেখা থাকবে। আজ থেকে ৭/৮ বছর আগের কথা ভাবলে দেখা যায়, তখন বাংলাদেশে দেশ বা বিদেশ হোক সব জায়গায় একই রকম খেলতো। বিশেষ করে টেষ্ট ম্যাচ। ৩ দিনে শেষ হতো। কিন্তু সেই দিন আর নাই টাইগারদের। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলংকার সাথে সিরিজ ড্র করার কৃতিত্ব দেখিছে।
সবশেষে বলতে চাই, ঘরের মাঠ বা হোম গ্রাউন্ড বেশি বেশি বলে নিজের দেশকে হেয় করা উচিৎ নয়। একসময় ভারত তার হোমগ্রাউন্ডে চন্দ্র শেখর, বেদী, প্রসন্ন প্রায় ১০ বছর নিজ দেশে ভালো খেলেছিলো।অথচ দেশের বাইরে তারা পাত্তাও পেত না। সে তুলনায় দেশের বাইরে আমাদের তারকারা এবং আমাদের দল অনেক ভালো খেলছে।
এমএ