গ্রেফতারে ভয়ে দেশ ছেড়ে পালানো ‘হানিফ’ কানাডায় সময় টিভির প্রতিনিধি

# সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার শ্যালক
সময় টেলিভিশনের একসময়ের দাপুটে মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান আবু হানিফ শুভ। দুলাই ভাই ঢাকার শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী হাবিবুর রহমান হাবিব। কারচুপির ভোটে যখন ফজলে নূর তাপস ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হন সেসময় হাবু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের (মিরহাজীর বাগ- দোলাইরপাড়) কাউন্সিলর হন। এরপর বাংলাদেশ ট্রাক চালক ইউনিয়নেরও নেতা হাবুকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে হাবু গড়ে তোলেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়।শুধু দেশে নয় দেশের বাইরে কানাডাসহ কয়েকটি দেশে বিপুল সম্পদের মালিক এই কাজী হাবিুর রহমান হাবু। হাবুর সাম্রাজ্যের ক্যাশিয়ার ছিলেন সময় টিভিতে চাকরি করা শ্যালক আবু হানিফ শুভ।
৫ আগস্টের আগে সময় টিভিতে থাকাকালে ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন হানিফ শুভ। সিটিগ্রুপের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে এবং দুলাভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে আগের মানসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা বাবুইকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করান হানিফ শুভ। ক্ষমতার দাপট এতটাই বেশি ছিলো যে তৎকালীন এমডি আহমেদ জুবায়েরকে চাপ দিয়ে তাকে বছরে একাধিকবার প্রমোশন দেয়াতে বাধ্য করেছেন হানিফ শুভ।
৫ আগস্টের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর তার ক্ষমতার উৎস দুলাভাই হাবু স্বপরিবারে আত্নগোপনে চলে যান।হানিফও এলাকা ছাড়া হয়ে যায়। নিরাপত্তার জন্য অফিসে বিএনপি পন্থি সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে থাকেন হানিফ শুভ। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। অন্যদিকে সিটিগ্রুপের আরো আস্থাভাজন হতে নানা তদবির শুরু করেন হানিফ। এমনকি সিটি গ্রুপকে সন্তুষ্ট করতে তৎকালীন হেড অফ নিউজ মুজতবা দানিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন হানিফ শুভ। পরে এক পর্যায়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন হেড অফ নিউজ মুজতবা দানিশ।
এরপরও থামেনি হানিফ শুভ। ক্ষমতা পেতে মরিয়া হয়ে সিটি গ্রুপের কাছে তাকে সময় টিভির সিইও করার প্রস্তাব পাঠানো হয়। তখনই মূলত হানিফ শুভর আসল মুখোশ ধরতে পারে সিটি গ্রুপ। তাকে সিইও করা না হলে দেশ ছাড়েন হানিফ শুভ। যদিও এর বহু আগেই নিজের পরিবারকে কানাডা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন হানিফ শুভ।
সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার শ্যালক হানিফ শুভ কানাডায় দুলাভাই হাবুর সম্পত্তি দেখাশোনা করছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি মামলা এবং গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির রোষানলে পড়ার ভয়ে দেশ ছাড়া হানিফ এখন সময় টিভির কানাডা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করছেন। এটি নিয়ে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। একজন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতার শ্যালক যিনি ঢাকায় থাকতে এলাকায় সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন,আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে চলতেন,ভোটের সময় কারচুপির সহায়তা করেছেন ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে তাকে কিভাবে কানাডার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের প্রতিনিধি হিসেবে সময় টিভি নিয়োগ দিয়েছে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। তাহলে কি সময় টিভি দেশে না পেরে দেশের বাইরে চাকরি দিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসরদের পুর্নবাসন শুরু করেছে?