ঢাকা সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমবায় ভাবনা


১২ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৩

ছবি সংগৃহীত

সমবায় ঐক্যের কথা বলে, সমবায় সংহতির কথা বলে। সমবায় উন্নয়নের কথা বলে। সমবায় গণতান্ত্রিক উপায়ে  পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে। সমবায় কেবল  একটি উন্নয়ন দর্শনই নয়, এটি আর্থসামাজিক আন্দোলনও বটে। বিশ্বের অনেক দেশে সমবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। যদিও আমাদের দেশে সমবায় কাক্সিক্ষত লক্ষ অর্জন করতে পুরোপুরি সক্ষম হয়নি তবু সমবায় নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। যেসব সাফল্য গাঁথা আছে সেগুলোও পাদ প্রদীপের আলোয় উঠে আসতে পারছে না বলে সমবায় নিয়ে কেউ কেউ নেতিবাচক ধারণা পোষন করে থাকে। বাংলাদেশের সমবায় আন্দোলনের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস  রয়েছে।  ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা ধরনের চড়াই-উতরাইয়ের  পেরিয়ে বাংলাদেশের সমবায় আন্দোলনকে এগিয়ে চলেছে ।

একটু পেছনে  ফিরে তাকালে  অতি সহজেই বুঝতে পারা যায় বঙ্গবন্ধুর সমবায়  ভাবনার বিষয় সমুহ।  ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ পরে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দিয়ে হয় আওয়ামী লীগ । দলের  সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। যুক্তফ্রন্টের  নির্বাচনী ২১ দফা প্রনয়ণে শেখ মুজিবুর রহমানের ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান।  ২১ দফার ৪ নম্বর দফা  ছিল- ‘সমবায় শিল্প প্রথা প্রতিষ্ঠার দ্বারা কুটির শিল্প ও শ্রমশিল্পের উন্নতি সাধন করা।’ নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্ট বিপুল সংখ্যক  আসন পেয়ে জয়লাভ করলে   পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন শেখ মুজিবুর রহমান। কৃষকের ছেলে কৃষিমন্ত্রী হয়ে কৃষি, কৃষক ও দেশের ভবিষ্যৎ ভাবনায় মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। মাত্র ১৫ দিন পর যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রীসভা  ভেঙে দেয় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। পরে ১৯৫৬ সালে আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকার গঠন করে। শেখ মুজিবুর রহমান আবার মন্ত্রী হন। পূর্বপাকিস্তান সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন, কৃষি শিল্পোন্নয়ন, সমাজকল্যাণ এবং সমাজ উন্নয়ন পরিকল্পনা দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা দেশব্যাপী মার্শাল ল’ জারি করে। সকল রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়ে যায়। পরের কথা সবার জানা। আমার কথা হলো দুবারে স্বল্প সময়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে শেখ মুজিব ক্ষমতার রাজনীতি বুঝতে সক্ষম হন। দেশ চালনার অভিজ্ঞতা যেমন অর্জন করেন। তেমনি দেশ ও জনগণের আগামীর ভাগ্য গড়ার স্বপ্ন দেখতে শিখে গেলেন। উন্নয়নের স্বপ্ন বুনতেও শিখে নেন। সেই অভিজ্ঞতা ও স্বপ্ন রচনার পরিচয় পাই। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বঙ্গবন্ধুর কথা কাজ ও ভাষণে এবং বাজেট প্রণয়নে এবং পঞ্চবার্ষিক কর্মপরিকল্পনায়।  ২১ দফা সংবলিত যুক্তফ্রন্টের ইশতেহারে মওলানা ভাসানী স্বাক্ষর করেন। ভাসানীর রাজনীতি থেকে অর্জিত জ্ঞান, দুবারের মন্ত্রী হওয়ার অভিজ্ঞতা এবং নিজের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা থেকে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেন। ছয় দফা দাবির পরতে পরতে কৃষি, কৃষক, শিল্প ও সমবায় বিষয়ক বক্তব্য অনেক। কতিপয় উদ্ধৃতি দিচ্ছি- ‘ক্ষুদ্রায়তন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।... কৃষি সমবায়ের মাধ্যমে চাল ও আটার কল, তেল-কারখানা, চিনির কল ও অনুরূপ কৃষিজ পণ্যশিল্প যতদূর সম্ভব বেশি করে স্থাপন করা ও বানানো হবে।... গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ যাতে শিল্পায়নের সুযোগ-সুবিধার শরীক হতে পারে এবং শহরগুলোর ওপর থেকে মানুষের ভিড় ও চাপ কমে যায়। গরীব চাষির হাত থেকে সম্পদ ধনী পুঁজিপতিদের হাতে ব্যাপকভাবে পাচার হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ অবিলম্বে গ্রামাঞ্চলের জনগণকে এরূপ শোষণের হাত থেকে বাঁচানোর অঙ্গীকার করছে। আর এটা করতে হলে কৃষি খাতে সুদূর প্রসারী বিপ্লবের প্রয়োজন এবং এ ধরনের বিপ্লব সাধনের পূর্বশর্ত হলো ভূমি ব্যবহারের বর্তমান পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন সাধন এবং বহুমুখী সমবায়ের মতো নয়া প্রতিষ্ঠান স্থাপন।’

লক্ষ্যণীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এবং সামাজিক বৈষম্য (শহর ও গ্রাম) কমানোর জন্য শেখ মুজিব কৃষি সমবায় ও বহুমুখী সমবায়কে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যা তার বিবেচনায় নয়া প্রতিষ্ঠান। যা জনগণ ছয় দফার সাথে গ্রহণ করেছেন। অন্যত্র তিনি বলেছেন-‘বিপ্লবের আর একটি পূর্বশর্ত হলো কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ। জমি খণ্ড বিখণ্ড ও উপ-বিভক্তির ফলে যে সব অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করা গেলেই এটা সম্ভব হবে।... তবে সমবায়ের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন চাষীর প্লটগুলোকে গ্রুপ করে তার যৌথ ব্যবহারের ব্যবস্থা দ্বারা আশু সমাধান করা যাবে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বহুমুখী সমবায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার জন্য বিরাট পরিকল্পনা নিয়ে তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এরকম সমবায় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি সেক্টরে বিপুল পরিমাণ সাহায্য দিয়ে সরকার এসব সমবায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। সেচ, পানি নিষ্কাশন, বাঁধ, গভীর নলকূপ, পাওয়ার পাম্প, উন্নত ধরনের বীজ, ঋণ, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষাদান প্রভৃতির আকারে এই সাহায্য দেওয়া হবে।’

বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন সমবায় পদ্ধতির চাষাবাদ ব্যাতীত কৃষির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই তিনি কৃষি উন্নয়নে সমবায়কে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পদ্ধতিতে যৌথ চাষাবাদ চালু করতে হবে। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পুরো বাংলাদেশকে একটি শ্মশানভূমিতে পরিণত করেছিল। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে যখন স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন তখন সারা দেশ ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং ধ্বংসের শেষ প্রান্তে। দেশের এক কোটি মানুষ তখনো ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রিত। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ এবং কোটি কোটি অসহায়গ্রস্ত মানুষকে পুনর্বাসন করা, ধ্বংসপ্রাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পুনরায় চালু করা এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া মিল-কারখানা চালু করাসহ অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন দেশকে গড়ে তোলার মতো কঠিন দায়িত্বভার তাকে গ্রহণ করতে হয়। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে সমবায়ের ডাক দিয়েছিলেন। দেশের বিপুলসংখ্যক গ্রামীণ জনগণ, যারা হতদরিদ্র এবং অশিক্ষিত, তাদের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য সমবায়কে একমাত্র অবলম্বন হিসেবে তিনিই প্রথম চিহ্নিত করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি ও মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। তাই এদেশের  সম্পদকে যথার্থ কাজে লাগাতে এবং দেশ গঠনের নিয়ামক হিসেবে এক পর্যায়ে গ্রহণ করলেন সমবায়ভিত্তিক কর্মযজ্ঞ। দেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নে বিভোর বঙ্গবন্ধু দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে এবং মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ, সম্পদের সুষম বণ্টন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সুযোগ-সুবিধা দান নিশ্চিত করার গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ১৩ (খ) অনুচ্ছেদে দেশের উৎপাদন যন্ত্র, উৎপাদন ব্যবস্থা ও বণ্টন প্রণালিগুলোর মালিকানার ক্ষেত্রে সমবায়ী মালিকানাকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় মালিকানা খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের শোভাযাত্রায় সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে সরকার বাংলাদেশের ৬৫ হাজার গ্রামে বাধ্যতামূলকভাবে বিভিন্নমুখী সমবায় চালু করবে।’ এ ঘোষণার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সমবায়ের মাধ্যমে দেশের সম্পদকে সুষমভাবে ব্যবহারের জন্য জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে একটি রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করেন। এর মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠন করা এবং দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনীতিতে দ্রুত পরিবর্তন আনাপূর্বক সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করা। এ প্রসঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছিলেন-গ্রামে গ্রামে বহুমুখী কোঅপারেটিভ করা হবে এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে কোঅপারেটিভ করার বিষয়টি সন্নিবেশিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, কিছুসংখ্যক কুচক্রী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাতের আঁধারে জাতির জনককে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করে।

পাক-ভারত উপমহাদেশে সমবায় আন্দোলনের ইতিহাস বেশ পুরনো। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯০৪ সালে প্রথম কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটিজ অ্যাক্ট সর্বপ্রথম জারি করা হয়। এর পর থেকে সারা ভারতে সমবায় আন্দোলন বিকাশ লাভ করতে থাকে। কিন্তু ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পরে সমবায় আন্দোলন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশ সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে বহু প্রতিষ্ঠান তাদের লক্ষ্য অর্জনে সফলতা পেয়েছে, যার মাধ্যমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর বিপুলভাবে উপকৃত হয়েছে, এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ মিল্ক ভিটা, চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব সমবায় সমিতি লিমিটেড, দি ক্রিশ্চিয়ান কোঅপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড, দ্য চিটাগং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড। এ ছাড়া দেশের শহরে ও গ্রামে বহু সমবায় সমিতি দারিদ্র্য বিমোচনে এবং বেকারত্ব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে নীরবে নিভৃতে তা অনেকেই জানেন না।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন সমবায় সম্মেলন আয়োজন করেছিল। বঙ্গবন্ধু সেই সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই ভাষণে তিনি তার স্বপ্ন এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমবায়ের কাক্সিক্ষত ভূমিকা নিয়ে অকপট বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন- ‘আমার  দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে—এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণমুখী আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।... সমবায়ের মাধ্যমে গরীব  কৃষকরা যৌথভাবে উৎপাদন যন্ত্রের মালিকানা লাভ করবে। অন্যদিকে অধিকতর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থায় প্রতিটি ক্ষুদ্র চাষী গণতান্ত্রিক অংশ ও অধিবার পাবে। সমবায়ের মাধ্যমে গ্রাম বাংলায় গড়ে উঠবে ক্ষুদ্র শিল্প যার মালিক হবে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক এবং ভূমিহীন নির্যাতিত দুঃখী মানুষ।... আজ সমবায় পদ্ধতিতে গ্রামে গ্রামে, থানায়, বন্দরে গড়ে তুলতে হবে মেহনতী মানুষের যৌথ মালিকানা। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে পাবে ন্যায্য মূল্য, শ্রমিকরা পাবে শ্রমের ফল ভোগের ন্যায্য অধিকার।’

জাতির পিতা কিন্তু বারবার বহুমুখী ও গণমুখী সমবায়ের কথা বলেছেন। যে সমবায় হবে তার স্বপ্ন পূরণের সহায়ক। যে সমবায় হবে উৎপাদন যন্ত্রের ন্যায্য মালিকানা, সম্পদের সুষম বণ্টন এবং শ্রমের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির সংগঠন। সমবায় নিয়ে মহাপরিকল্পনা ছিল বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনায়। তিনি বলেন- ‘কো-অপারেটিভ আমি প্রতিটি গ্রামে করতে চাই। এটা সোজাসুজি বাঙালি কো-অপারেটিভ। যাকে বলা হয় মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ। সমবায় মূলত কাজ করে জনগণ তথা এর সদস্যদেরকে নিয়ে। সদস্যরাই হচ্ছে সমবায়ের প্রধানতম নিয়ামক। নানা পেশার সব মানুষের চাহিদা ও রুচি  ভিন্ন। এই ভিন্নতাকে একত্রে করে ঐক্যের  মাধ্যমে  সমবায় আন্দোলনকে আমরা কর্মমুখর করে গড়ে তুলতে পারি নিজেদের শ্রম আর ঘামে। সমবায়কে সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ না রেখে  সমবায়কে সকল মানুষের জন্য একটি উন্নয়নের বেদীতে  পরিণত করে এগিয়ে যাব সকলে মিলে।  সমবায় আন্দোলন উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে হবে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। সমবায় হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম  হাতিয়ার।

এস ডি সুব্রত : সাহিত্যিক ও কলাম লেখক।