ইরানে হামলা: তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মানব সভ্যতা
নেমে আসতে পারে ধর্মীয় সংঘাত। এমন সব সমীকরণ সামনে রেখে গুরুত্ব দিতে হবে দেশের জিডিপিতে ১৪.১০ শতাংশ অবদান রাখা কৃষি খাতে। এতে বৃদ্ধি পাবে খাদ্য উৎপাদন। জোর দিতে হবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়। মজুত রাখতে হবে কমপক্ষে তিন বছরের চাল-ডালসহ নিত্যবাজারের পণ্য। এছাড়াও ইরান-ইসরাইল যুদ্ধকালীন সবার চেষ্টা থাকবে নিজ নিজ ঘরে শুকনো খাবার ও এ জাতীয় খাদ্য পণ্য মজুতের। এতে দেখা দিতে পারে খাদ্য সঙ্কট। শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে ছুটবে মানুষ। জনজীবনে নেমে আসতে পারে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তার কালো মেঘ।
অপ্রত্যাশিত এমন কঠিন থেকে কঠিনতর সময়ে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের নিম্ন আয়ের অন্যান্য দেশগুলোতেও দেখা দিতে পারে অবর্ণনীয় ও নজিরবিহীন দুর্ভিক্ষ। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া এক পরিসংখ্যান তুলে ধরছি- “জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে গাজায় ৯৬ শতাংশ নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষি উৎপাদন কমেছে ৯৩ শতাংশ, সামগ্রিক উৎপাদন কমেছে ৯২ শতাংশ এবং সেবা খাতের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে ৭৬ শতাংশ। বেকারত্বের হার বেড়ে ৮১ দশমিক ৭ শতাংশে (বর্তমানে প্রায় ৮৫ শতাংশে) পৌঁছেছে, যা এই অঞ্চলের মানবিক বিপর্যয়কে আরো প্রকট করেছে”। এ তথ্য-উপাত্ত থেকেও সামনের পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে তা বুঝা মুশকিল।
ইরানে বিশ্ব মোড়লদের মদদে ইসরাইলের এমন হামলা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহরত হিসেবেই দেখা যেতে পারে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মোতায়েন করেছে অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান। প্রসঙ্গত, গত ১ অক্টোবরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে শনিবার রাতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এ হামলায় দুই ইরানি সেনা নিহত হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ইরানের সেনাবাহিনী। ইরানে এমন ভয়াবহ হামলার পরে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দা জানালেও উল্টো ইসরাইলে হামলা না চালাতে ইরানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব রাজনীতির এমন পক্ষপাতদুষ্ট অধঃপতন ঠিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেও ঘটেছিল। ইতিহাস তা ই সাক্ষী দেয়।
মোস্তফা কামাল তোহা
লেখকঃ মোস্তফা কামাল তোহা
তরুণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট