ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


সরকারি ত্রাণ তহবিলের সুষ্ঠু বণ্টন সুনিশ্চিত করুন


১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪৭

সংগৃহিত

দশদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ।

দেশের এই ক্রান্তিকালে সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা অর্থাৎ সব মহল থেকেই যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে তাদের খাবারের সুব্যবস্থা করার। সরকারি পর্যায়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে অসহায় দিনমজুর গরীব মানুষদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম। তবে নিউজ চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখছি সরকারি ত্রাণ বিতরণ নিয়ে আছে অনেক অভিযোগ।

আর বরাবরের মত এবারও অভিযোগ উঠছে ত্রাণ কার্যে নিয়োজিত চেয়ারম্যান, মেম্বার, কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে- যাঁরা ত্রাণের প্রকৃত হকদার তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ উঠপছে ত্রাণ বিতরণে স্বজন, দলীয় ও নিজেদের কর্মীদের ত্রাণ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, ও কাউন্সিলর, তাদের কর্মচারী ও তাদের দলের লোকজন, যাঁরা তাদের ভোট দেয় তাদের ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার ব্যাপারে অধিক প্রাধান্য দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। আমাদের সমাজে, আমাদের বাড়ির আশেপাশে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের খাবার কষ্ট হলেও কাউকে বলতে পারেন না। কারো কাছে সাহায্য চাইতে পারে না। তাদের সহায়-সম্বল, সামর্থ্য না থাকলেও আত্মসম্মানবোধের জন্য কারও কাছে হাত পাতেন না।

এইসব মানুষ কিন্তু ত্রাণ সাহায্যের বাইরেই থেকে যায়। আর যারা চাইতে পারেন তারা বিভিন্ন মহল থেকেই সাহায্য পান। এজন্য কোনো অসহায় মানুষ অর্থাৎ কোনো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীই যেন ত্রাণ-সাহায্য থেকে বঞ্চিত না হয় তা বিবেচনা করা উচিত। আর তার জন্য প্রয়োজন একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

ভোট রাজনীতি, স্বজনপ্রীতি, ব্যক্তিগত পছন্দ এইগুলো ব্যাতিরেকে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। ত্রাণ বিতরণে কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় প্রকৃত অভাবগ্রস্তদের তালিকা করতে হবে।

এর মধ্যে দিয়ে ত্রাণ বিতরণ সুনিশ্চিত করা এখন খুবই জরুরী। যেন কোন অভাবগ্রস্ত মানুষ যেন ত্রাণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য চেয়ারম্যান মেম্বার কিংবা কাউন্সিলরদের কাঁধে দ্বায়িত্ব না দিয়ে সকল সমালোচনা এড়ানোর জন্য এবং ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।

আর যারা কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারেন না কিন্তু অভাবগ্রস্ত তারা যেন বঞ্চিত না হয় সে ব্যাপারেও আমাদের সকলকেই চেষ্টা করতে হবে। যারা ত্রাণকার্যে নিয়োজিত রয়েছেন আপনাদের কাছে অনুরোধ দয়া করে এই ক্রান্তিলগ্নে ভোট রাজনীতি বা দলীয় রাজনীতি করবেন না। সব দুঃস্থ মানুষ যেন ত্রাণ সহায়তা পায় তা সকলের সহায়তাই সুনিশ্চিত করুন। প্রকৃত অভাবগ্রস্তদেরই ত্রাণ সহায়তা প্রদান করুন। দিনমজুর বা অভাবির ছদ্মবেশে যেন অসাধু ব্যক্তিদের ত্রাণ না দেওয়া হয় তা সুনিশ্চিত করুন এই আহ্বান জানাই।

নজরুল ইসলাম জুলু, সিনিয়র সাংবাদিক, রাজশাহী ।