ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


বনে বাঘ না থাকলে বাঘের নয়, বনেরই ক্ষতি হয়


১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:০১

ছবি সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হারন অর রশিদ যোগদান করেই সৃষ্টি করেছিলেন অনন্য উদাহরণ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে যোগদান করে নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময় সফলতার সঙ্গেই কাটিয়েছেন। নির্বাচন শেষে শুরু করেছেন জুয়া, মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও জঙ্গি বিরোধী বিশেষ অভিযান। একে একে গ্রেফতার হয়েছে মাদক ব্যাবসায়ী, চাঁদাবাজ, ও বড় বড় সন্ত্রাসী। নানা ঘটনায় আলোচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরকে তার সময়ে মোটামুটি সবাই বলেছে শান্তির নারায়ণগঞ্জ। গডফাদাররা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন পুলিশ সুপারের কঠিন অভিযানের কারণে। এসপি হারুনকে বলা হয়েছে সিংহাম। ছিচকে সন্ত্রাসী থেকে বড় বড় সন্ত্রাসীরা লেজ গুটিয়ে ছিল তার সময়ে। এসপি হারুন সাধারন মানুষের কথা শুনেছেন বা সাধারন মানুষ তার পর্যন্ত যেতে পেরেছে যা অন্যান্য অনেক এসপির ক্ষেত্রে দেখা মেলেনি। তার সময়ে সাধারন মানুষ পুলিশি হয়রানির শিকার তুলনামূলক কম হয়েছে বরঞ্চ এটা হয়েছে যে, এসপি হারুনের সময়ে অপরাধিদের মনে পুলিশি ভীতির সঞ্চার হয়েছিল যা হয়তো সমসাময়িক কালে নারায়ণগঞ্জবাসী দেখেনি। পত্র পত্রিকার পুরনো কপি ঘাটলে এখবর হয়তো দেখা যাবে, পুলিশ অপরাধি সখ্যতার খবর কিন্তু একমাত্র এসপি হারুনের সময়ের পত্রিকায় দেখা যাবে পুলিশি হুঙকারে আতঙ্কিত অপরাধিদের খবর। এখন হয়তোএসপি হারুনকে অনেকে ভিলেন বলছে কিন্তু সাধারন/আম জনতা এসপি হারুনকে ভিলেন ভাবে নাকি অন্য কিছু তাদের সাথে একটু কথা বলুন আপনারা যারা জল ঘোলা করে তার বিরুদ্ধে বলতে বলতে লিখতে লিখতে ফেনা তুলছেন তারাও বলার ও লেখার ভাষা খুঁজে পাবেন না।

নভেম্বরের ৩ তারিখে তাকে প্রত্যাহারের পর থেকে আজ ১৩ তারিখ এই দশ দিনেই নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী, ফুটপাত চাঁদাবাজ, জুয়ার কারবারিসহ নানা অপরাধিদের অট্টহাসি অবশ্যই নারায়ণগঞ্জবাসী দেখেছে।

দেশ সেরা জাতীয় দৈনিকের গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুর করে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও তার বন্দনা করেছেন তার নানা কর্মকান্ডের কারণে।

নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী ফুটপাত দখলমুক্ত ও হকার উচ্ছেদ করে ফিরিয়েছেন শহরের সৌন্দর্য। মিরজুমলা সড়কে গাড়ি চলাচল করেছে। ঈদে দরিদ্র মানুষের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গী বিতরণ করেন এবং দুর্গাপূজায় দরিদ্র হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গী বিতরন করে ধর্মীয় সম্প্রীতির বিরল নজীর স্থাপন করেছেন। সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি না থাকায় (দ্বিমত থাকতে পারে) ব্যাবসার সুন্দর, নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজমান ছিল।

এসপি হারুন তার বিদায় অনুষ্ঠানে বলেছেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। হয়তো তিনি ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন জেনে বা না জেনে। কিন্তু তিনি উপরে এক কথা বা ভিতরে আরেক কথা যাই বলুন না কেন, তিনি যেসব কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন নারায়ণগঞ্জে অতিতে কেউ এমনটা করতে পারেননি।

একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে ‘হাতি ফাঁদে পরলে, চামচিকাও লাথি মারে’।

নারায়ণগঞ্জ আমার কাছে সুন্দরবনের মত মনে হয়। সুন্দরবন রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিহীন শ্রীহিন। সুন্দরবনে যদি বাঘ না থাকে, তাতে করে বাঘের কিছুই হবে না, বরঞ্চ বনের শ্রী নষ্ট হবে। সেই সাথে বনের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষনও কম থাকবে।