ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ওবায়দুল হাসান


২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪০

ছবি সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার পর বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ উপস্থিত ছিলেন। গতকাল অবসরে যাওয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকিও বঙ্গভবনে ছিলেন।

এর আগে শপথ নিতে সকাল ১১টার আগে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন ওবায়দুল হাসান।

গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের তারিখ জানানো হয়।

১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের পর থেকে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর অবসরে গেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার ৬৭ বছর পূর্ণ গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে গতকাল তিনি অবসরে যান।

১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তার পিতা মরহুম ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসাবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং সংবিধান রচনার পর তাতে স্বাক্ষর প্রদান করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে এম.এস.এস. ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এলএল.বি. ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

১৯৯১ সালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত 'ইন্টারন্যাশনাল ল' ইয়ারস কনফারেন্স'-এ অংশগ্রহণ করেন। চীনের প্রসিকিউরেটর জেনারেলের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের সফরসঙ্গী হিসেবে ১৯৯৭ সালে বেইজিংসহ বেশ কিছু নগরী ভ্রমণ করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগে অনেক সাংবিধানিক মোকদ্দমা পরিচালনা করেন।

বিচারপতি হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সাংবিধানিক বিষয়াদি সম্পর্কিত মোকদ্দমার একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধানমন্ডি ল' কলেজে একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০৯ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২-এর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।