লালদীঘির ইতিহাস শেষ পর্ব
![](https://natunsomoy.net/uploads/shares/Laldhigi-2-2018-08-31-16-56-23.jpg)
লাল দীঘিকে ঘিরে চট্টগ্রামের মানুষের মুখে একটা কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। একবার এক দিনমজুরের মেয়ে ঐ দিঘীতে গোসল করতে নেমেছিলো। হঠাৎ পায়ে শিকল বেঁধে তাকে দিঘির পদদেশের এক অলৌকিক দেশে নিয়ে যাওয়া হলো।
যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেটা ছিলো এক বাদশার দরবার। লাল বেগমের সাথে বাদশাহ’র বিয়ে ঠিক হয়েছিল। একদিন বাদশা লাল বেগমকে দেখতে চাইলে জানা যায় লাল বেগম তার প্রসাদ থেকে এক ক্রীতদাসের সাথে পালিয়েছে।
এ খবর তখনও বাদশা জানতেন না। তাই বাদশার সাথে লাল বেগমের অভিনয় করতে মজুরের ঐ মেয়েকে নিয়ে আসা হয়েছিল। কথাপ্রসঙ্গে বাদশা মেয়েটার আসল পরিচয় জানতে পারে। ক্ষুদ্ধ বাদশার নির্দেশে সবাই আসল লাল বেগমকে খুঁজতে শুরু করেন।
পরে অন্দর কিল্লার দীঘি থেকে দু’শ হাত দূরে পর্তুগীজদের কিল্লায় লাল বেগমের অবস্থান সনাক্ত করা হলে বাদশা ঐ কিল্লায় আক্রমণ করে। অনেক খুনে দিঘীর পানি লাল হয়ে যায়।
যুদ্ধে বাদশা পরাজয় বরণ করেন। সবাই পালিয়ে গেলও বাদশাহ্ লাল বেগমকে উদ্ধার করার আশায় দিঘির পাড়ে থেকে যায়। এই নিয়ে একজন চারণ কবি লিখেছেন : “লালদীঘিতে আগুন ধরে জল শুকিয়ে গিয়েছে, মাছগুলো সব ডাঙ্গায় উঠে কিলবিল করতে লেগেছ’’।
১৯১০ সালে বৈশাখের ১২ তারিখ লালদীঘির পাড়ে আবদুল জব্বার সবপ্রথম বলীখেলা অনুষ্ঠান করেন। সেই থেকে প্রতিবছর ১২বৈশাখ লালদিঘির পাড়ে জব্বারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে লালদীঘির পশ্চিম পাড়ে একটি মসজিদ আছে। শহরবাসীর চিত্তবিনোদনের জন্য সবুজ গাছপালা ঘেরা পার্কও আছে এখানে।