ঢাকা সোমবার, ১২ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


পাবনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের যত কু-কৃর্তি, জিডির পর জিডি


১৫ মে ২০১৯ ২১:১৭

সংগৃহীত

পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একই কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এ জিডি করেন।

জিডিতে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ আনা হয়। জিডির আবেদনে মোট ৪১ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, সরকারিকরণের পদ সৃজনের তথ্য ছকে, অধ্যক্ষের প্রত্যয়নপত্রে, মন্তব্যে মিথ্যা তথ্য প্রদান, ফাইলে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষের সার্বিক অসহযোগিতার কারণে গত ৯ মে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমারের কাছে ওই কলেজের বিভিন্ন বিভাগের মোট ৫১ জন শিক্ষক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান এবং তার কিছু অনুসারী ওই শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চাটমোহর থানায় অধ্যক্ষসহ মোট ১২ জনকে অভিযুক্ত করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নং-৫১১।

শিক্ষকদের অভিযোগে আরও জানা গেছে, চাটমোহর সরকারি কলেজের নিয়মিত শিক্ষকদের পদ সৃজনের জন্য অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত তথ্য ছক, মন্তব্য এবং প্রত্যয়নপত্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক বেঁধে দেয়া সময়ের শেষে গোপনীয়ভাবে কলেজের সভাপতি ও ইউএনও সরকার অসীম কুমারের কাছে জমা দেন। এতে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান অসত্য তথ্য দিতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা ইউএনওর কাছে অধ্যক্ষের জমা দেয়া কাগজগুলো দেখতে চেয়ে আবেদন করেন। পরে কাগজগুলো দেখালে অধ্যক্ষ কর্তৃক পূরণকৃত কাগজগুলোতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জমা দেয়ার বিষয়টি নজরে আসে ওই শিক্ষকদের।

এরমধ্যে নিয়মিত উপস্থিত শিক্ষককে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত দেখানো, বৈধ শিক্ষককে তালিকা থেকে বাদ দেয়া, অনেকের প্রত্যয়ন পত্রে স্বাক্ষর না করা এবং ফাইলপত্রে বেশ কয়েকটি কাগজপত্র সংযোজন না করেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে আবারও কল দিলে অধ্যক্ষর ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

জিডির ব্যাপারে জানতে চাইলে চাটমোহর থানা পুলিশের ওসি শেখ নাসীর উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার (১৪ মে) বেশ কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এর আগে কলেজ অধ্যক্ষও একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যেকোনো অপ্রীতকর ঘটনা এড়াতে কলেজ এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার জানান, পদ সৃজন-সংক্রান্ত কাগজপত্র মৌখিকভাবে বার বার উপস্থাপন করতে বলা হলেও অধ্যক্ষ তা উপস্থাপন করতে গড়িমসি করেন। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ পড়ায় তিনি এসিল্যান্ড (চাটমোহর) ইকতেখারুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. বায়েজীদ বিন আকন্দকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।'

নতুনসময়/আল-এম