মায়ের সঙ্গে হোটেলে কাজ করেও গোল্ডেন এ প্লাস পেলন কাওছার

অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা, মা করেন ভাতের হোটেলের ব্যবসা। মায়ের সঙ্গে ভাতের হোটেলে কাজ করে অতি কষ্টে চলে সংসার ও বোনের লেখা পড়া। রাজশাহীর তানোর পৌরশহরের চাপড়া বাজার মোড়ের এমনি এক অসহায় পরিবারের সন্তান কাওছার আলী। ভাতের হোটেলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন আঁকে সে।
কাওছার এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। ছোটবেলা থেকে দেখছে তার বাবা নহির উদ্দিন মন্ডল নানান রোগে অসুস্থ। তখন থেকে মা কাজল রেখা নিজ গ্রাম ধানতৈড় ছেড়ে কাজের সন্ধানে পাশের এলাকা চাপড়া বাজার মোড়ে মেইন রাস্তার পাশে ভাড়া নেন একটি দোকান ঘর। আর সেই ঘরেই বসবাসের পাশাপাশি প্রথমে ছোলা মুড়ির ব্যবসা ও বর্তমানে ভাতের হোটেলের ব্যবসা করে সংসার চালিয়ে আসছেন।
বাবা অসুস্থতার সেই কষ্ট থেকে জীর্ণশীর্ণ কুটিরে জন্ম নিয়ে কাওছার আলী এবার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যদিও সেই স্বপ্ন পূরণে পথে পথে রয়েছে সংশয়। তারপরও এগিয়ে যেতে চায় মেধাবী কাওছার আলী।
কাওছার তানোর পৌরশহরের চাপড়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। কাওছার ও এক শিশু মেয়েকে নিয়ে এখনও সেই জীর্ণশীর্ণ ভাড়ার কুটিরে তার অসুস্থ্ বাবা ও মায়ের রয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। তবে গত বছরে গচ্ছিত কিছু টাকা দিয়ে এলাকার পাশে একটি নিজেদের ঘর নির্মাণ শুরু করলেও টাকার অভাবে তা আর শেষ করতে পারেননি তাঁর মা।
কাওছারের মা বলেন, ভাতের হোটেলে দিনরাত কাজ করে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে কোনো রকম বেচেঁ আছি। ছেলের ইচ্ছা লেখাপড়া করা কিন্তু আমার সেই আর্থিক সমর্থন নেই।
কাওছার জানায়, যত বাধাই আসুক, আমি এগিয়ে যাবো। সেই লক্ষ্যেই আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, ছেলেটি পিএসসি ও জেএসসিতে এ প্লাস ও বৃত্তি পেয়েছে। সুযোগ পেলে তার স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব।