ধর্ষণের আপোষ চল্লিশ হাজারে, অর্ধেক গিললো মাতব্বররা

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ৩য় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয় মাতাব্বররা ৪০ হাজার টাকায় ফয়সালা করে দিয়েছে। তবে ফয়সালার পুরো টাকা দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত শিশুর বাবা।এতে দুঃক্ষ প্রকাশ করেছে এলাকা বাসি।
যানাযায়,ধর্ষণের শিকার ছাত্রী উপজেলার এলেঙ্গাতে অবস্থিত একটি মাদ্রাসায় ৩য় শ্রেণীতে পড়ে। তার বাবা ওই এলাকাতেই বাসা ভাড়া করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তারা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা।
অভিযুক্ত ধর্ষক আনোয়ার হোসেন এলেঙ্গা হাই স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ও নেত্রকোনা জেলার মদনপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মাহবুব আলমের ছেলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকার সেমকো সিএনজি পাম্পের পূর্বপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
এ বিষয়ে ছাত্রীটির বাবা বলেন, আমি এলেঙ্গাতে বাসা ভাড়া নিয়ে একটি সেলুন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি।বখাটে আনোয়ারের পরিবার আমাদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকে। গত ১২ই এপ্রিল সকালে আমার মেয়েকে আনোয়ার তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার দিলে আমার স্ত্রী ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে ধর্ষক পালিয়ে যায়।
নির্যাতিত ছাত্রীর বাবা আরও জানায়, আমি থানায় মামলা করতে যাবো শুনে ধর্ষকের বাবা ও বড় ভাই স্থানীয় মাতাব্বরদের বিষয়টি জানান। পরে তারা আমাকে মিমাংসায় বসতে বাধ্য করে। শালিসে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিতে গেলে নিতে অস্বীকৃতি জানাই। পরে তারা আমার স্ত্রীর কাছে টাকাগুলো দিয়ে যায়। বাকি ২০ হাজার টাকা মাতাব্বররা নিয়ে যায়। আমাকে বারবার শালিসের কাগজে স্বাক্ষর দিতে বললেও আমি কোন স্বাক্ষর দেইনি।
মশাজান গ্রামের স্থানীয় মাতব্বর আবদুল জলিল মিমাংসার বিষয়টি শিকার করে জানান, ছেলে মেয়ে নাবালক হওয়ায় জালাল হাজী, নবাব আলী, দেলোয়ার হোসেন, মোহনসহ ১০-১২ জন মিলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করি। এ সময় ছেলে পক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিতে পারবে না জানালে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে মেয়ের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, মেয়ের পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা-ই দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আনোয়ারের বাবা মাহবুব হোসেন বলেন, ছোট একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় মাতাব্বরা আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ধর্ষক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমার বাবা ও বড় ভাই মাতব্বরদের নিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে এলেঙ্গা পৌর সভার মেয়র নুর-এ-আলম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। যদি কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসে বিষয়টি আমি দেখবো। কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।