ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


রামেক হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী মাষ্টারের মৃত্যু


৭ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩৬

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী মাষ্টার মৃত্য জানাযা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউপি রামরামা বুরুজপাড়া গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী মাষ্টার মৃত্যু বরণ করেছেন (ইন্না লিল্লা .......... রাজিউন)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধা ৫টা ৪৫ মিনিটে রামেক হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার জামাতা মকসেদ আলী ও তার স্ত্রী মোছাঃ রোকেয়া বেওয়া এবং তার ৩ মেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন কারো পিতা শ্বশুড় বা স্বামীর এমন মৃত্যু যেন না হয়। তার স্ত্রী রোকেয়া বেওয়া ও জামাই মকসেদ আলী জানান তার দুপুর ২টার দিকে রামেক হাসপাতালে ৩২নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেন। তারপর হতে অনেক বার অনুরোধ করেও কোন ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দেয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর অসুস্থ্যকালে কোন বেডও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এব্যাপারে তার জামাই ও স্ত্রী বারবার অনুরোধ করলেও অন্য লোকের জন্য বেড বরাদ্দ দিলেও মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোন বেড বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তাঁর স্ত্রী আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী বারবার ডাক্তার চাইলেও কোন ডাক্তার সাড়া দেয়নি, মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত কোন ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দেয় নাই। কিন্তু নার্সের প্রেসক্রিপশন অনুসারে ইনজেকশন আনা হলেও তার শরীরে পুশ করা হয়নি। এতে করে তিনি চরম উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং এক সময় হার্ড এ্যাটাক করে তিনি মারা যান। এব্যাপারে তার পরিবার সহ জানাজায় আশা বাগমারা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ জাকিউল ইসলাম তাহেরপুর পৌর মেয়র, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আবু বাক্কার মৃধা মুনছুর, ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাহার আলী সহ সকলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাঁর পরিবারকে আস্বস্থ্য করেন এ ব্যাপারে যথাযথ কতৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দেন। উপস্থিত জনসাধারণ ঐসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা খারাপ বলেই অনেকে বিদেশে চিকিৎসা করতে যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি জামলই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন, তার মুক্তিযোদ্ধার গেজেটনং ১৬৩৭। মৃত্যুকালে তিনি এক স্ত্রী ৩ মেয়ে নাতি নাতনি সহ সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

বুধবার আড়াইটায় তাহেরপুর হাইস্কুল মসজিদ প্রাঙ্গনে তার জানাযা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়। যানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবস্থানে তার পুত্রের কবরের পাশে কবরস্থ করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম, তাহেরপুর পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের দসভাপতি আলহাজ আবু বাক্কার মৃধা মুনছুর, শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোকবুল হোসেন, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার রফিক উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার সাহার আলী, আরো উপস্থিত ছিলেন তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক প্রভাষক মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব, তাহেরপুর জনতা ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার প্রাং, জামলই মাদ্রাসার সুপার, গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনিসুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা বুলবুল খন্দকার, তাহেরপুর আঞ্চলিক প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম সামসুজ্জোহা মামুন, নির্বাহী সদস্য রায়হান ইসলাম, বাগমারা মাদক ও সন্ত্রাস নির্মুল কমিটির অন্যতম সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।