বাঁধ ভেঙে প্লাবন আতঙ্কে পাইকগাছার ১৩ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ

খুলনার পাইকগাছায় ভদ্রা নদী সংলগ্ন কালিনগর ওয়াপদার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে আছেন উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ।
গত ২০ বছরে অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। ১৩টি গ্রামে লবণপানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। এবারও ওই ভাঙন এলাকার এক কিলোমিটার দূরে ৪০০ মিটার অংশে ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে।
গত বছর বাঁধ ভেঙে ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ লবণ পানিতে বন্দি হয়েছিল। পানির তোড়ে ঘেরের মাছ, মাটির তৈরি ঘর, ধান, সবজি ও ফসল ভেসেছিল।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কালীনগর, দারুল মল্লিক, হরিণখোলা, সৈয়দখালি, সেনেরবেড়, গোপীপাগলা, খেজুরতলা, তেলিখালী, হাটবাড়ী, ফুলবাড়ি, বিগরদানা, দুর্গাপুর ও নোয়াই গ্রামের মানুষ।
চলতি বছরের আগস্টেও আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয়রা বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন।
বর্তমানে কালিনগর সাধুঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি থেকে প্রভাষ মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দাবি— অবিলম্বে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার বলেন, প্রতি বছরই বাঁধে ভাঙনের ঘটনা ঘটছে। এতে লবণপানি ঢুকে কৃষিপ্রধান এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নদীশাসন না করে মানুষের জমি নষ্ট করে পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় বা টেকসই হচ্ছে না। তাই টেকসই বাঁধ দরকার।
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ বলেন, দেলুটি ইউনিয়নের উত্তরে মরা ভদ্রা নদী, দক্ষিণে শিপসা নদী এবং পূর্বে মাদুর পাল্টাসহ ভদ্রা নদী। পাঁচটি ওয়ার্ডের ১৩টি গ্রাম নিয়ে ২২ নম্বর পোল্ডার। এই পোল্ডারে প্রতি বছর এখানে কোটি কোটি টাকার তরমুজ ও অন্য ফসল উৎপাদন হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, কালীনগরে বেড়িবাঁধের ফাটল ও ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হচ্ছে। এ ছাড়া পোল্ডারের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য একটি বড় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।