ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে রোহিঙ্গারা

স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে চাওয়া রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিশাল বহর।
বুধবার বিকাল থেকেই ধীরে ধীরে শরণার্থী শিবির ছাড়তে শুরু করেছেন রোহিঙ্গাদের একাংশ। আজ বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে নেয়াখালীর ভাসানচরের দিকে রওনা হন তারা। জানা যায়, কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে র্যাব-৭ ও র্যাব-১৫। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে একাধিক কাপড়ের প্যান্ডেল ও বুথ তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়েছে আগেই। একই সাথে সুশৃঙ্খলভাবে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে কর্মরত রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিবীর সদস্যরা।
গত বুধবার জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী দিনে কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত আছে। কিন্তু শরণার্থীদের স্থানান্তর প্রস্তুতি কিংবা রোহিঙ্গাদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংস্থাটিকে যুক্ত করা হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ব্যাপারে জাতিসংঘ তার আগেকার অবস্থানেই রয়েছে, অর্থাৎ ভাসানচরে যাবার ব্যাপরে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন জেনে-বুঝে এবং মুক্তভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য জায়গাটি সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক, সুনির্দিষ্ট ও হালনাগাদ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেন তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কক্সবাজারের ৩৪টি ক্যাম্পে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর দ্বীপে অস্থায়ীভাবে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়ে সরকার। এ কারণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আবাসন প্রকল্প নির্মাণও সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।