ধর্ষণ মামলার আসামী বৃদ্ধ জামিন নিয়ে ফুলের মালায় শোডাউন, সমালোচনার ঝড়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত মোঃ মতিউর রহমান মুক্ত মিয়া (৮০) নামে এক বায়োবৃদ্ধ আদালত থেকে জামিন পাওয়ায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে শোডাউন করে ফুলের মালায় বরণ করে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে । এসময় আনদ উল্লাস করা সহ মিছিলও করেন মুক্ত মিয়ার এডভোকেট ছেলের নের্তৃত্বে। এ ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ ঘটনাটি ঘটছে সোমবার বিকালে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউপির হীরাপুর গ্রামে। মুক্ত মিয়া হিরাপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির বাসিন্দা। তার ফুলের মালা পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
এলাকাবাসী ও থানায় মামলার এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ওই ভুক্তভোগী শিশুর পিতা জীবিত নেই। আর্থিক অস্বচলতার কারণে গত ৩/৪ বছর ধরে মামার বাড়ি হীরাপুর গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন । পার্শ্ববর্তী গ্রাম নুরপুর লামারবাড়ি সুমাইয়া মাদ্রাসায় ২য় শ্রেণীতে পড়ে। ওই ছাত্রী কে মজা খাওয়ার লোভ দেখিয়ে ১৫ জুলাই সকাল একটি পরিত্যক্ত ঘরের বারান্দায় নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত মো. মতিউর রহমান ওরফে মুক্ত মিয়া (৮০), এসময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ছাত্রী কে উদ্ধার করে। এসময় অভিযুক্ত মুক্ত মিয়া পালিয়ে যান। বিষয়টি এলাকার সর্দার মাতাব্বরদের জানান ওই ছাত্রীর মামা। মীমাংসা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন সাহেব সর্দারগণ। দীর্ঘ দিন ধরে কোন সমাধান না পেয়ে গত ১৭ আগস্ট ওই ছাত্রীর মা মতিউর রহমান (মুক্ত মিয়া) কে আসামী করে আখাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই মামলায় ৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান মুক্ত মিয়া। জামিন নিয়ে এসেই এলাকায় তাকে ফুলের মালা পড়িয়ে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে শোডাউন ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। তবে তার ছেলেরা বলছেন আমার বাবা ওমরাহ হজ্ব করে এসেছেন।
এঘটনায় উক্ত এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। হিরাপুর গ্রামের কৃষক আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মুক্ত মিয়া যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তার তীব্র নিদা জানাই এত নিকৃষ্ট ঘটনা আমরা আগে কখনো শুনিনি এটার বিচার না হলে দেশে আইনের সুশাসন থাকবে না। মেয়েটি অসহায় মামার বাড়িতে থাকে। তার মামাও কৃষিকাজ করে।
আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এর ব্যবসায়ী ও হিরাপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন ভুইয়া বলেন. মুক্ত মিয়া আমার আপন মামা হন, উনি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তার সত্যতা পেয়েছি, চেষ্টা করছি সমাজের লোকজন নিয়ে মেয়ের পক্ষের সাথে সমাধান করার জন্য, শুনছি মামা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেছেন, তিনি এসেই গলায় ফুলের মালা পড়ে এলাকায় শোডাউন ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন,এটা ভাল হয়নি আমি তার নিদা জানাই।
ওই ভোক্তাভোগীর শিশুর মা বলেন, আসামী জামিন পেয়ে খুঁশিতে মিষ্টি বিতরণ করছেন। আসামী ফুলের মালা পড়ে আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে মিছিল করে মহড়া দিয়েছেন ওরা প্রভাবশালী আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে আমরা আতঙ্ক আছি।
মোঃ মতিউর রহমান মুক্ত মিয়ার ছেলে এডভোকেট মিলন মিয়া বলেন, আমার বাবা কে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ফাঁসানার জন্য মামলা দিয়েছেন। মহামান্য হাইকার্ট আমার বাবার বয়স বিবচনা করে জামিন দিয়েছেন।
অভিযুক্ত মুক্ত মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়, আমি মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলি তাই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রসুল আহমদ নিজামী বলেন, মামলাটি এখন তদন্তাধীন আছে, বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করা হবে।