যৌন উত্তেজক ওষুধ খাইয়ে একাধিক ছাত্রীর সাথে শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্ক

নওগাঁয় মান্দায় মেধা বৃদ্ধির প্রলোভন দেখিয়ে যৌন উত্তেজক ওষুধ খাইয়ে একাধিক ছাত্রীর সাথে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ সম্পর্ক তৈরির অভিযোগ উঠেছে রেজাউল হক নামের এক লম্পট শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রেজাউল জেলার মান্দা উপজেলার কাঁশোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতেও এই ধরনের একাধিক ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, লম্পট শিক্ষক রেজাউল হক গত বুধবার স্কুল ছুটির দিন সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে ডেকে নেয়। পরে ছাত্রীকে মেধাবৃদ্ধির কথা বলে যৌন উত্তেজক ওষুধ খাইয়ে ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের টিনসেডের একটি কক্ষে নিয়ে আপত্তিকর কাজে লিপ্ত হন। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের কিছু শ্রমিক ঘটনাটি দেখে প্রকাশ করলে এ নিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ঘটনায় গত শুক্রবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল হককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে ঘটনায় পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক লাপাত্তা। এতে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বুধবার শিক্ষক রেজাউল হক ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিদ্যালয়ের এক আমের গাছের তলায় কথা বলে পরে টিন সেটের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এতে সন্দেহ হলে কক্ষের খোলা জানালা দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় আরো দুই শিক্ষক রেজাউলের সাথে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল কুদ্দুস বলেন, শিক্ষক রেজাউল হক এ রকম কাজ বারবার করে আসছেন। এর আগেও এক ছাত্রীর সাথে তিনি আপত্তিকর কাজে জড়িয়ে ছিলেন। তখন ওই ছাত্রীর সাথেই বিয়ে দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছিল। বিদ্যালয় ছুটি থাকার পরও ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে একই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হবার পর বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওই ছাত্রীর পিতা এমদাদুল হক শিক্ষক রেজাউল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমার মেয়েসহ অনেক ছাত্রী তার কাছে প্রাইভেট পড়ে। আমার মেয়েসহ তার কাছে প্রাইভেট পড়া অনেক শিক্ষার্থীকে দীর্ঘদিন যাবত ধরে যৌন উত্তেজক ওষুধ খাইয়ে আসছে ওই শিক্ষক। কিন্তু বিষয়টি এই ঘটনার পর জানতে পেরেছি। আমি ওই লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে ৯ম-১০ম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীর বাবা-মার কাছ থেকেও।
শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, ওইদিন শিক্ষার্থী আমার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসলেও তার সাথে অন্য কিছুই হয়নি বলে এড়িয়ে যান। কাঁশোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকসেদ আলী প্রামানিক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পর শিক্ষক রেজাউল হককে ডেকে এবিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। রেজাউল তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন ভবিষ্যতে তিনি এমন কাজ আর করবেন না।’
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আল-মামনুর রশিদ বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরপরই আমি প্রধান শিক্ষককে জরুরী সভা আহবান করতে বলেছি। ওই সভায় শিক্ষক রেজাউল হক তার অপরাধ স্বীকার করে নিজে থেকেই পদত্যাগ করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ আলম বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নতুনসময়/আইকে