ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


অজানা ভাইরাসে একদিনেই নিহত ২, হাসপাতালে একই গ্রামের আরও ২ জন


৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৩১

পাবনার ফরিদপুরে আকস্মিক অসুস্থতায় সাথী ও বিথী নামে দুইবোনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে সাথী নিজ বাড়ীতে এবং শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিথি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তাদের মারা যাবার বিষয়ে চিকিৎসক বা সংশ্লিষ্টরা সঠিক কোন কারণ নিশ্চিত করে বলতে পারে নি। তবে খাদ্যে বিষক্রিয়া অথবা অজানা কোনো ভাইরাস এ তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসক।

সাথী ও বিথি ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের শহীদ প্রামানিকের মেয়ে। এদের মধ্যে সাথী খাতুন অষ্টম শ্রেণীর ও বিথি চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। এছাড়া একই উপসর্গ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ওই গ্রামের তাসলিমা খাতুন ও রেশমা খাতুন নামে দুই গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে স্কুল থেকে বাড়িতে ফেরার পরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সাথী ও বিথী। এরপর তারা মাঝে মাঝেই বমি শুরু করে। বাড়ীর সদস্যরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মনে করে দুই বোনকে প্রথমে গ্রামের পল্লী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করায়। তাদের মধ্যে বিথীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হপসাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে সাথী বাড়িতে মারা যায় এবং শনিবার সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে মারা যায় বিথী।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের তাজ প্রামানিকের স্ত্রী তসলিমা খাতুন (৪০) ও ফজলুল হকের স্ত্রী রেশমা খাতুন (৩২) নামে দুই গৃহবধূ একই ধরনের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ পড়েছে। অসুস্থ হওয়ার পরে তারাও একাধিকবার বমি করে বলে তাদের স্বজনরা জানান। পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই দুই গৃহবধূকে পাবনা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক।

বিষয়টি নিয়ে গ্রামের মানুষদের মাঝে আতংক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই আতংকে রোববার সকালে গ্রামের আরো কয়েকজন অসুস্থ্যবোধ করলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলাপকালে ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ আলী জানান, দুই বোনের মৃত্যু সংবাদ স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জেনেছি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি কিভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ আল আকসার আনন জানান, স্বজনরা তাদের জানিয়েছেন, ঝাল মুড়ি খাবার পরে দুই বোন অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ফুড পয়েজনিং বা অন্য কোনো কারণে সাথী-বিথির মৃত্যু হতে পারে বলে তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন।

এদিকে, এ ঘটনার পর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুলু ওয়াল মারজানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম রোববার সকালে ওই গ্রামে পরিদর্শনে যান। তারা স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন এবং কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। এ সময় এলাকাবাসীকে এ নিয়ে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দেন।

নতুনসময়/আইকে