আসামী মিজানুর বাইরে, কারাগারে আরেক মিজানুর

যশোরে পুলিশের বিরুদ্ধে আসামীকে বাইরে রেখে নামের মিল থাকায় আরেকজনকে চালান করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথম সন্তান জন্ম দেবার সময়ে রাতেই অসুস্থ স্ত্রী ও নবজাতককে হাসপাতালে রেখে সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত কারাগারে বন্দি রয়েছেন মো. মিজানুর রহমান। বুধবার দুপুরে জুডিশিয়াল আদালত থেকে জামিন পেলেও এখনো মুক্তি পাননি তিনি।
কারাগারে থাকা মিজানুর রহমানের আইনজীবী ডেজিনা ইয়াসমিন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত তার জামিন দিয়েছেন। মিজানুরের স্পষ্ট একটা ঠিকানা রয়েছে। দুজনের এলাকাও আলাদা। সেখানে এই ধরনের ভুল কাম্য নয়। মামলার এজাহারে জানা যায়, বিস্ফোরক মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। তার পিতার নাম নূরুল হক হাওলাদার। তার মায়ের নাম ফকরুননেছা। তার বাড়ি সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ায়। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি যশোর শহরতলীর সুজলপুর জামতলা এলাকার একটি বোমা হামলা মামলার আসামি পাগলা মিজান। অথচ এই মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসায় সোমবার রাতে স্যানিটারি মিন্ত্রী মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। মিজানুর রহমানের মায়ের নাম আমিরুন্নেছা। তার বাড়ি খোলাডাঙ্গা গ্রামের সর্দারপাড়ায়।
এদিকে বুধবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে পাল্টে যায় পুরো চিত্র। জানা যায়, মামলার প্রকৃত আসামি মিজানুর রহমান পাগলা মিজান এবং স্যনিটারি মিস্ত্রী মিজানুর তোতলা মিজান বলে পরিচিত। স্যনিটারি মিস্ত্রী মিজানুরের ভাই আব্দুর রহিম জানান, আমার ভাইয়ের স্ত্রী আসমা সোমবার সকালে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে। এটাই তার প্রথম সন্তান। বাড়িতে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব হলেও বিকেলের দিকে ভাইয়ের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় ভাই তার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে সদর হাসপাতালে যায়। এরপর তার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে স্ত্রী সন্তান রেখে রাতে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে থাকার সময় পুলিশ আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। আমার ভাই তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে বললেও পুলিশ পরিচয়পত্র না দেখেই জোর করে ধরে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে সুজলপুর গ্রামের হটাৎপাড়ায় এলাকার আসামী মিজানুর রহমানের বৃদ্ধা মা ফকরুননেছা বললেন, আমার স্বামীর নাম মৃত নূরুল হক হাওলাদার। তার ছেলে মিজান তিন থেকে চার বছর ধরে বউ বাচ্চা নিয়ে ঢাকায় থাকে। সে আসে না। শুনেছি সেখানে সে ইট ভাঙার কাজ করে। এক মিজানের পরিবর্তে অন্য মিজানকে আটককারী যশোর কোতয়ালি থানার এএসআই আল মিরাজ খান এ ব্যাপারে আজ বুধবার বলেন, ‘তাকে আটকের সময় সে একা ছিল। কেউ আইডি কার্ড দেখানোর কথা বলেনি।’ এ ব্যাপারে যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় জানতে পেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোর্টকে অবহিত করে তার জামিনের ব্যবস্থা করে। আটককারী কর্মকর্তাকে শোকজ করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
নতুনসময়/আইকে