মেরে পেট্রোল-লবণে চুবিয়ে রাখা হয়েছিল সায়েমের মরদেহ

ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে সায়েম খানকে হত্যা করে লাশ পেট্রোল-লবণ দিয়ে কঙ্কাল বানিয়েছে তারই প্রতিবেশী লিটন ও তার সহযোগীরা। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) আদালতে ১৬৪ ধারায় তারা সায়েম হত্যার এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন লিটন মিয়া ও তার মা নুরজাহান বেগম। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে সাভার ও ধামরাই সায়েম হোসেনকে হত্যার অভিযোগে প্রতিবেশী লিটন মিয়া ও তার মা নুরজাহান বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে শুক্রবার তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দিতে তারা হত্যার পর কঙ্কাল বানানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রেমিকাকে পাওয়ার জন্যই মূলত এ হত্যাকাণ্ড। হত্যার জন্য সায়েমকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসা হয়। এর পরে তাকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ গুম করতে তার হাত পা কেটে একটি ড্রামের ভেতর রাখা হয়। তাতে পেট্রোল ও লবণ মিশিয়ে রেখে ১৯ দিন পর লাশ কঙ্কাল বানানো হয়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের মারাপাড়া গ্রামের আজিবর রহমানের ছেলে লিটন মিয়া পাশের সাটুরিয়া উপজেলার জান্না গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর লিটন মিয়া তার প্রতিবেশী আব্দুল খালেকের ছেলে সায়েম হোসেনকে ওই মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। লিটনের আচরণ ভালো না হওয়ায় মেয়েটি লিটনকে ছেড়ে সায়েমকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি লিটন মিয়া জানতে পেরে সায়েমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত বছরের ১৪ জুন রাতে লিটন অন্যের মোবাইল ফোন দিয়ে কল করে সায়েমকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। এ সময় লিটন, তার মা নুরজাহান বেগমসহ আরও কয়েকজন মিলে সায়েমকে গলাটিপে হত্যার পর তার হাত-পা কেটে একটি বড় ড্রামে রাখেন। ড্রামের ভেতর পেট্রোল ও লবণ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
এদিকে ১৬ জুন সায়েমের নিখোঁজের কথা উল্লেখ করে তার বাবা আব্দুল খালেক ধামরাই থানায় একটি জিডি করেন। ২ জুলাই সন্দেহবশত লিটনের বন্ধু প্রতিবেশি মাদকসেবী রবিনকে আটক করে পুলিশ। ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, মামলার তদন্তকারী দীর্ঘ ৬ মাস বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়াকে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি নিয়ে রাতেই ধামরাইয়ের মারাপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে তার মা নুরজাহান বেগমকেও গ্রেফতার করা হয়। এরপর শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) পুলিশ তাদের আদালতে পাঠালে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠান।
নতুনসময়/আইকে