ঢাকা রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


অতিথি না করায় প্রধান শিক্ষককে পিটুনি


১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৭

ঈশ্বরদীর চরমিরকামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি না করায় শিক্ষার্থীদের সামনেই প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে মারধর ও বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন ও এলাকাবাসীদের দেওয়া তথ্য মতে, ছলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম মনসের খানকে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টুকে প্রধান অতিথি করেন।

এতে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর রহমান বিশ্বাসের পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালকে শিক্ষার্থীদের সামনে বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম মনসের খানকে আগে থেকেই বলা ছিল। তিনি বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রধান অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মিন্টুকে সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এসময় স্থানীয় সাবেক এমপি মঞ্জুর রহমান বিশ্বাসের এনজিওর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালকে শিক্ষার্থীদের সামনেই বেদম প্রহার করে রক্তার্থ করেন। এসময় প্রধান অতিথি মোখলেছুর রহমান মিন্টুকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও তাঁরা জানান। জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পরে নামানোর ঘটনা সম্পূর্ণই মিথ্যাচার বলে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন তাঁরা আরও বলেন, জাতীয় পার্টির এই সাবেক এমপি মঞ্জুর রহমান বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি না করার কারণেই পরিকল্পিতভাবে তাঁরই ব্যক্তিগত এনজিও নিউএরা ফাউন্ডেশনের কর্মচারী মুক্তার খান, কুদ্দুস বিশ্বাস, নাহিদ খান ও আজিজল মালিথা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক টেনে হিঁড়ছে বের করে এনে শিক্ষার্থীদের সামনে বেদম প্রহার করেন।

ঘটনার সময় মঞ্জু বিশ্বাস স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন বলে প্রধান শিক্ষক জানান। প্রধান শিক্ষককে মারধরের সময় বিজয় দিবসে বিদ্যালয়ে আসা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভয়ে দিক বিদিক ছুটাছুটি শুরু করে। এ বিষয়ে সাবেক এমপি মঞ্জুর রহমান বিশ্বাস জানান, প্রধান শিক্ষককে কে বা কারা প্রহার করেছে তা তিনি জানেন না। তিনি অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালের পূর্ব পুরুষরা রাজাকার ছিল। জাতীয় পতাকা অবমাননা করায় এলাকাবাসীর সাথে ঝামেলা হতে পারে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করেন এই সাবেক এমপি। এদিকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব রায়হান।

নতুনসময়/আইকে