ঢাকা রবিবার, ১৮ই মে ২০২৫, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


ঘুষ না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতনের মামলায় ‘মিথ্যা প্রতিবেদন’ ওসির


১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪৮

ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় ঘুষ চেয়ে না পেয়ে গৃহবধূকে মারধরের মামলাকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে শশীভূষণ থানার ওসির (তদন্ত) বিরুদ্ধে।

শশীভূষণ থানার ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল হাসান খানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী ও ভূক্তভোগী সারমিন।

সোমবার বাদী অভিযোগ করে বলেন, ৪ বছর আগে পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামের মুনাফ জমাদারের ছেলে মঞ্জুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের একটি মেয়ে সন্তান আছে।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার পরিবারের কাছে ব্যবসা করার জন্য ২ লাখ টাকা চেয়ে আসছিল। সারমিনের পরিবার যৌতুকের এই টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সংসারে অশান্তি নেমে আসে।

১২ অক্টোবর রাতে মঞ্জু ও তার পরিবারের সদস্যরা সারমিনকে বেধড়ক মারধর করে। পরদিন খবর পেয়ে বাবা নুর মোহাম্মদ হাওলাদার মেয়েকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় সারমিন বাদী হয়ে ২৯ অক্টোবর স্বামীসহ ৪ জনকে আসামি করে শশীভূষণ থানায় মামলা করেন।

পুলিশ মামলার প্রধান আসামি মঞ্জুকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। দেড় মাস জেলে থাকার পর মঞ্জু জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলা তুলে নিতে সারমিনকে হুমকি দিতে শুরু করে।

সারমিনের অভিযোগ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শশীভূষণ থানার ওসি তদন্ত আবুল হাসান খান চার্জশিট দেয়ার জন্য তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। বাদী ওই টাকা দিতে না পারায় আসামিদের সঙ্গে লেনদেনে প্রভাবিত হয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমতি চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পাঠান।

৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মামলার অগ্রগতি জানতে থানায় গিয়ে বাদী জানতে পারেন, মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ওসি তদন্ত আবুল হাসান খান জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ ছিল। তদন্তে বিরোধ থাকার বিষয় প্রমাণিত হলেও মারধরের বিষয় প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

তবে বাদীর দাবি অনুযায়ী টাকা চাওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

শশীভূষণ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেছেন, প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে মামলাটি এজাহার নেয়া হয়েছিল। গ্রেফতার করে আসামিকেও জেলে পাঠানো হয়েছে। ফলে মামলাটি মিথ্যা প্রমাণের কোনো সুযোগ নেই। বাদিনীর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।

নতুনসময়/আইকে