ঢাকা সোমবার, ৫ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২


এ সপ্তাহে শপথ নেবেন সুলতান-মোকাব্বির, দুশ্চিন্তায় বিএনপি


২ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪৭

চলতি সপ্তাহে শপথ নেবেন ঐক্যফ্রন্টের দুই সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর ও মেকাব্বির খান। গতকাল শপথ নেওয়ার কথা ড.কামালকে জানিয়ে দিয়েছেন তারা। জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ গ্রহণ করলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করার চিন্তা করছে গণফোরাম। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের এই দুই নেতার শপথ গ্রহণের ঘোষণার পর চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে ঐক্যফ্রন্টের বড় শরিক দল বিএনপি। বিএনপির অনেক নেতাই সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর ও মেকাব্বির খানকে বিশ্বাসঘাতক বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, রোববার সংসদ অধিবেশন শুরু হলে শপথ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্পিকারকে অনুরোধ করবেন । আগামী ৪ অথবা ৫ মার্চ তারা শপথ গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মনসুর গণফোরামের প্রার্থী হলেও নির্বাচিত হয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে। অপরদিকে সিলেট-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনার প্রার্থিতা হাইকোর্ট বাতিল করলে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানকে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে সমর্থন দেয় বিএনপি। নির্বাচনের পর থেকেই তাদের শপথ নিয়ে রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়। শুরুতেই নির্বাচিত দুজনেই শপথ নেয়ার পক্ষে একমত ছিলেন। কিন্তু দল ও জোটের বিরোধিতার এক পর্যায়ে তারা পিছু হটেন। নানা নাটকীয়তা শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়। তিন শ’ আসনের মধ্যে আটটিতে জয় পায় নতুন এই রাজনৈতিক মোর্চার প্রার্থীরা। এরমধ্যে ৬ জন সরাসরি বিএনপির নেতা। বাকি দু’জন গণফোরামের। নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এমপিদের শপথ গ্রহণের বিষয়টি উভয় জোটকে ভাবিয়ে তুলেছে।

সুলতান মনসুর বলেন, ‘আমরা দু’জন শপথ নেব। তবে তাড়াহুড়োর কিছু নেই। আমি অসুস্থ, হাতে ফ্র্যাকচার। ব্যান্ডেজ বাঁধা। সুস্থ হতে এখনও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। শপথের তো এখনও বেশ সময় আছে। বিএনপি তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। ঐক্যফ্রন্টও সিদ্ধান্ত নেবে। বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তো আলাদা আলাদা দল। আমাদের সিদ্ধান্ত ‘অবশ্যই পজিটিভ’ হবে।

ধানের শীষ প্রতীকে আপনি নির্বাচিত হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আইনী কোন সমস্যা হবে কি-না? বলেন, না, এটা কোন সমস্যা হবে না। বিএনপি যদি সংসদে যেত, আর আমি যদি তাদের বিরুদ্ধে সংসদে ভোট দিতাম সেক্ষেত্রে সমস্যা হতো। এখন যেহেতু বিএনপি সংসদে যাচ্ছে না। তাই আমার শপথে কোন সমস্যা হবে না। আমি তো গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি।

জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছেন সংসদে কথা বলার জন্য। তাদের জন্য কাজ করতেই আমাকে সংসদে যেতে হবে। মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া-কমলগঞ্জ) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে জয় পান ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। ইতোপূর্বে ধানের শীষ প্রতীকে কোন প্রার্থী ওই আসনে কখনও বিজয়ী হতে পারেননি। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে যখন বিএনপি সরকার গঠন করেছিল তখনও এ আসনে জামানত হারায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। এবার এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হাড্ডাহাডি লড়াই করে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ত্যাগী দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। উল্লেখ্য, ’৯৬ সালে সুলতান মনসুর নৌকা প্রতীক নিয়ে একই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

নতুনসময়/আইকে