ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


মানুষ বাঁচেন তার কর্মের মাঝে; পদ, পদবী, চাকরিতে নয়


৭ জুলাই ২০২০ ২১:২৭

ফাইল ছবি

ফেসবুকের এই যুগে যে যার মত শো অফ করে যাচ্ছে। শো অফে তেমন কোন ক্ষতি না থাকলেও নীতি, আদর্শের গুল্লি মেরে নীতিহীন মানুষদের নিয়ে বেশি লাফালাফি করলে দেশ গোল্লায় যাবে।

“মানুষ তার চাকরির সমান বড় নন
মানুষ তার কর্মের সমান বড় হন”

আজকাল খুব কমন একটা বিষয় লক্ষ্য করছি নেতা, আমলা ও নব্য বিসিএস ক্যাডারদের নিয়ে চলছে উন্মাদনা। নেতা, আমলা ও ক্যাডারদের যে হারে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানানোর হিড়িক পরেছে আমি খুব অবাক হই। যে নেতা, আমলা, ক্যাডারদের হাতে একটা দেশের ভাগ্য নির্ভর করে তাদের নিয়ে এত উচ্ছ্বাস, এত উন্মাদনা! তাহলে কি ধরেই নেব তারা সবাই মহানায়ক। তাদের সবারই ফুলের মত চরিত্র! দেশে যত অনিয়ম, যত দুর্নীতি ভূতে এসে করে যায়!

একজন মানুষকে চেনা, জানা কি এতই সহজ? এক খাটে বছরের পর স্বামী স্ত্রী একসাথে ঘুমিয়ে একজন আরেকজনের চরিত্র সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারেন না সেখানে আমাদের দেশে অজনা, অচেনা বড় পদের নেতা, আমলাদের নিয়ে মাতামাতি চলতেই থাকে! ফেসবুকপূর্ব যুগে এই অপসংস্কৃতি ছিলো না। বঙ্গদেশের নির্বোধ মানুষগুলো বুঝতেই চান না মানুষ তার চাকরির সমান বড় নন, মানুষ তার কর্মের (সততা, নীতি, আদর্শের) সমান বড় হন।

একজন বড় নেতার সাথে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করা মানে আপনিও বড় নেতা নন। একজন এসপি, ডিসির সাথে ছবি তুলে পোস্ট করা মানে আপনিও এসপি, ডিসি নন। সভ্য দেশগুলোতে মানুষকে কখনও তার পেশা দিয়ে বিচার করা হয় না। প্রতিটি পেশাই মর্যাদার। সেখানে কে কতটা সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করল সে বিষয়টি মূখ্য হওয়া উচিৎ।

প্রজাতন্ত্রে নিয়োজিত প্রতিটি কর্মকর্তা, কর্মচারী দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দয়া করে সৎ ও নীতিবান মানুষদের নিয়ে মাতুন। সে যে পোস্টেই চাকরি করুক না কেন তার নীতি আদর্শের কথা পোস্ট করুন। দয়া করে কারও সম্পর্কে শতভাগ না জেনে প্রশংসা- স্তুতি করবে না। দেশকে জাপান, সিংগাপুর, সুইজারল্যান্ডের মত দুর্নীতিমুক্ত মনে হয়। আরও ভালো হয় অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ মানুষদের পরিত্যাগ করুন। সে যত বড় নেতা, আমলাই হোক না কেন - সে যদি অসৎ হন দেশের কাছে সে ডাস্টবিনের আবর্জনার চেয়েও পঁচা। আসুন নীতি, আদর্শের বাটখারায় মানুষ মাপি। আমলা- কামলার বিভাজন ভুলে গিয়ে নীতি আদর্শের পতাকা উড়াই।