ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


আপনি যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ !!


২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৪৩

ফাইল ছবি

রাত তিনটা। গভীর রাতই বলা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা ফোন করে জিজ্ঞেস করলো- তন্ময় ভাই, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নাকি চাঁদের বুকে দেখা গেছে?

আমি : প্রথমত আপনি একজন মুসলমান-আমার দুঃখ হচ্ছে। দ্বিতীয়ত-আপনি আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা-এটা আরও দুঃখজনক।

ওই নেতা আর কোনো কথা না বলে লাইনটা কেটে দিল।

অন্যদিকে তারও আগ থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, বাম-ডান নেতা ; পরিচিত অনেকে ফোন করে একই কথা জিজ্ঞেস করেন।

হয়তো এই রকম অনেকেই অনেককে ফোন করে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিল (ধারণা)।
অভিজ্ঞতার কথাগুলো এই কারণে বলেছি, কিছুদিন আগে এক নারী বাইক রাইডার করোনাভাইরাসের আক্রান্ত নিয়ে আমাদের অতি আবেগে সবাই সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেছি। সাথে শেখ হাসিনারাও।
কতিপয় মিডিয়া তো...

টকশোতে ওই বাইক রাইডারকে আনার পর পুরো বিষয় ক্লিয়ার হয়েছেন সবাই।

কিছুদিন আগেও গণস্বাস্থ্যের কিট নিয়ে জাফরুল্লাহ ভাইকে জাতীয় বীর বানিয়ে অনেকের কান্নাকাটির সাথে সাথে শেখ হাসিনার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধারের স্ট্যাটাস দেখেছি। আর ওই স্ট্যাটাসে গা ভাসিয়ে দিয়েছে তথাকথিত পদ-পদবী ব্যবহার করা ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীও।

আপনারা যে কাউকে জাতীয় বীর বানান- এতে আমার/আমাদের অনেকের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আগে বিস্তারিত জানুন, যে বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস-ছবি ভাইরাল করবেন-এটির ওপর একটু স্টাডি করুন।

কারণ, আপনার ভুল আর আবেগে ভরা স্ট্যাটাস অনেককে বিভ্রান্ত করবে। সাথে আপনিও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। রাজাকার সাঈদীকে আমার-আপনার মতন লোকদের কারণে পুরো দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। মেরে ফেলা হয়েছে কতিপয় সাধারণ মানুষকে।

অন্যদিকে গুজবকারী হিসেবে আমরা অনেকে আপনাকে চিহ্নিত করবো।
তবে কোনো রাজনৈতিক নোংরা এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইলে সেটা ভিন্ন বিষয়।

অনেকের স্ট্যাটাস দেখেছি। ইচ্ছে করেই প্রোফাইলে গিয়েছি। একটি মানুষ কোন কারণে অন্যের ভুয়া তথ্যে গা ভাসিয়ে দিতে পারে-এটি একটু দেখার জন্য, যাচাই করার জন্য।

গণস্বাস্থ্যের কিট নিয়ে অনেকে রাজনীতি খোঁজে পেয়েছেন! কিন্তু কী রাজনীতি বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কে-এটা পরিস্কার করেননি। একবার সরকার প্রধানকে দোষারোপ করছেন আবার আরেকবার ওই সরকার প্রধান শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণও করছেন।

আপনার সস্তা আবেগকে প্রশ্রয় দিয়ে স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে না। সরকারের হাতে বিকল্প উপায় যেহেতু আছে, সেহেতু কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো না করে কিট হস্তান্তরের সকল রকমের প্রসিডিউর মেনেই সরকার গণস্বাস্থ্যকে স্বাগত জানাবে এবং এভাবেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।

আরেকটি কথা-

আমাদের অনেক অব্যবস্থাপনা আছে। আর মহামারির এই দিনগুলোতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও একই চিত্র দেখা দিয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ও দেশদ্রোহী বসবাস করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নিমর্মভাবে হত্যা করে যে দেশটাকে পরিকল্পিতভাবে মিনি পাকিস্তান বানিয়েছিল-রাতারাতি সেখান থেকে আমরা উঠে আসতে পারবো না। কারণ, কয়েকটা জেনারেশন ইতোমধ্যেই পাকিস্তানী মনোভাব নিয়ে বড় হয়েছে। চিন্তা জগতেও পাকিস্তান। ক্ষমতার অংশীদার হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের গভীরে তাদের শিকড়।

আমি মনেকরি, অসংগতিগুলো তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের তুলে ধরতে হবে। শুধু শুধু আবেগ দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ না করে প্রকৃতভাবে কী করলে এ জাতির জন্য কল্যাণকর হবে এবং করোনাভাইরাসের এই দিনগুলোতে আমরা কিভাবে নিজের পাশাপাশি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পারবো-তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে, কাজ করতে হবে।

আপনি কি বলেন...?

ইচ্ছে হলে শেয়ার করতে পারেন। আমার সাথে যুক্ত থাকতে চাইলে লাইক-ফলো করতে পারেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলতে তৌফিক দান করুন-

লেখক-সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম-বোয়াফ