ঢাকা সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


দালালদের দৌরাত্ম্যে অসহায় ফ্রী ল্যান্স ডিরেক্টররা


৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৫

বাঁয়ে ফয়সাল ফারুক, ডানে ভুক্তভোগী মামুন

মিডিয়ার অস্থিতিশীল বর্তমান অবস্থায় যেখানে শংকিত ষ্টেশন প্রোডিউসাররা সেখানে ফ্রী ল্যান্স প্রোডিউসারদের বর্তমান অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়। সম্প্রতি ফ্রী ল্যান্স প্রোডিউসারদের এই অবস্থার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে নতুন এক অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ,নতুন এক শংকা। তা হচ্ছে দালালদের দৌরাত্ম্য। এসব নামসর্বস্ব দালালদের লক্ষ্যই হচ্ছে বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। কোম্পানিগুলোর সারা বছর যেসব নিজস্ব ভিজুয়াল কাজ হয়ে থাকে এবং যারা এসব কাজগুলোর ওয়ার্ক ওর্ডার দিয়ে থাকে নামসর্বস্ব এসব দালালদের লক্ষ্য হচ্ছে এসব ওয়ার্ক ওর্ডার দেয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে নিজেদের দক্ষ ডিরেক্টর পরিচয় দিয়ে এসব নিজস্ব ভিজুয়াল কাজগুলি নিয়ে ফ্রী ল্যান্স ডিরেক্টরদের কাছে কাজগুলো পাস করে দেয়া। কাজ শুরুর সময় কথা একরকম থাকলেও কাজের মাঝামাঝি পর্যায়ে পাল্টে যেতে থাকে সম্পুর্ন চিত্র। যার শেষটা হয় প্রতারণার মাধ্যমে। সম্প্রতি এমনই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান মামুনুর রহমান নামক একজন ফ্রী ল্যান্স নির্মাতা। তিনি জানান ফয়সাল ফারুক নামক স্বল্প পরিচয়ের সূত্রে পরিচিত নাম সর্বস্ব এই ডিরেক্টর (খোজ নিয়ে জানা যায় সে মূলতঃ ওই সময়টাতেই ওই প্রতিষ্ঠানেরই ক্যালেন্ডার এর কাজ করছে)তাকে জানান প্রচন্ড কাজের চাপের কারনে সে(ফয়সাল ফারুক) বারাকা গ্রুপ অফ কোম্পানির এন্যুয়াল বেস্ট এমপ্লয়ি অফ দা ইয়ার এর একটা ক্লীপস এর কাজ করতে পারছেনা, সে মামুনুর রহমান কে অনুরোধ করে কাজটা করে দেয়ার জন্য।

প্রশ্ন হচ্ছে ভিজুয়াল কাজ রেখে যে ক্যালেন্ডার প্রিন্টিং এর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সে প্রকৃতপক্ষে কি সত্যি ই ডিরেক্টর?
কাজটার ধরন/ভেন্যু/পেমেন্ট সব নির্দিষ্ট করে কাজ শুরু করতে বলে এবং বারাকা কর্তৃপক্ষ এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার আগে বলে দেয় যে তাকে (মামুন) বলতে সে আর ফারুক একই টিম।কাজ শুরু করার পর থেকে বদলে যেতে থাকে ওয়ার্ক ওর্ডার। শুটিং ভেন্যু বেড়ে যায়। কাজটা প্যাকেজ কন্টাক্ট বেসিস হওয়ায় মামুন ব্যাপারটি ফারুক কে জানালে ফারুক জানায় এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হতে,বাড়তি ভেন্যুর জন্য যে ব্যায় বাড়বে তা বারাকা দিয়ে দিবে।

ফারুকের দেওয়া আশ্বাসে মামুন বারাকা কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট সময়ে তাদের ভিডিও ক্লিপটি বুঝিয়ে দেয় যার ব্যাপ্তিকাল ছিল ওয়ার্ক অর্ডার এর দ্বিগুণ। বারাকা লিমিটেডের উক্ত অনুষ্ঠানটি শেষ হয়ে গেলে মামুন বারাকা কতৃপক্ষের কাছে কাজের বিল চাইলে কতৃপক্ষ থেকে জানানো হয় যে কাজটি দেয়া হয়েছে ফয়সাল ফারুককে এবং বিল সংক্রান্ত যে কোন ব্যাপারে ফারুকের সাথে কথা বলতে।ফারুককে ব্যাপারটি জানানো হলে ফারুক একটি ব্ল্যাংক মানি রিসিপ্ট এই বলে চায় যে বারাকা কর্তৃপক্ষ একাউন্ট পে চেক এর মাধ্যমে কাজের অবশিষ্ট টাকা দিবে। তাকে মানি রিসিপ্ট দেয়া হলে সে মানি রিসিপ্ট টি দিয়ে ক্যাশ টাকা উত্তোলন করে। মামুনকে জানায় পরবর্তীতে বর্ধিত কাজের টাকা তো দূরে থাক প্রাথমিক ওয়ার্ক অর্ডার এর নির্দিষ্ট টাকা দিবে না।

মামুন ব্যাপারটি নিয়ে বারাকা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তাকে আবারও জানানো হয় কাজটি ফয়সাল ফারুক নিয়েছে এবং বিল সংক্রান্ত যে কোন ব্যাপারে তার সাথে কথা বলার জন্য। যার সমাপ্তি টা ছিল খুবই তিক্ত পূর্ণ এবং কষ্টদায়ক।

ফারুক তোর আসল রূপ দেখিয়ে সরাসরি বলে যে কাজটা আমি এনে দিয়েছি তাই আমার ভাগের এত টাকা। আর বারাকা লিমিটেড তার ভাষ্যমতে ফুল পেমেন্ট করে নি এই বলে অবশিষ্ট যে অংকের টাকা মামুনকে বুঝিয়ে দেয় তাতে লাভ তো দূরের কথা প্রোডাকশন কস্ট ই উঠানো যায়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে ভিজুয়াল কাজ রেখে যে ক্যালেন্ডার প্রিন্টিং এর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সে প্রকৃতপক্ষে কি সত্যি ই ডিরেক্টর?আর এই দালালদের ব্যাপারে এখনই যদি কোন পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে এই দুষ্টু নোংরা থাবা জাল বিস্তার করবে ব্যাপকভাবে এবং তা হতেও পারে যা চলে যাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।