ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৫ই মে ২০২৫, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


কীভাবে যে ফিরে এসেছি, তা বোধহয় একমাত্র ঈশ্বরই জানেন


১০ এপ্রিল ২০২০ ০২:২৮

“মরতে বসেছিলাম। কীভাবে যে ফিরে এসেছি, তা বোধহয় একমাত্র ঈশ্বরই জানেন।” বলছেন লন্ডনে করোনা থেকে সেরে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিয়া লাখানি। খাদ্যনালিতে অস্ত্রোপচারের জন্য সপ্তাহ কয়েক আগে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন রিয়া। অস্ত্রোপচারের পর আচমকাই তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে জ্বরও আসতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে। তবু সচেতনতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁর লালারসের পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্টে দেখা যায় রিয়া করোনা পজিটিভ। এরপরই তড়িঘড়ি তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। গোটা ওয়ার্ড ফাঁকা করে দেওয়া হয়। কিন্তু যতদিন যাচ্ছিল, ততই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন রিয়া। ফলে লন্ডনের করোনার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অবশেষ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি।

চিনের ইউহানের পর কোভিড-১৯ (COVID-19) হানা দিয়েছে ইউরোপে। ইটালি, স্পেনের পর করোনার গ্রাসে ব্রিটেন। ইতিমধ্যে সেখানে প্রায় সাত হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। এমন সময় অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিয়া লাখানি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম BBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেরে ওঠার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানান রিয়া।

তাঁর কথায়, “শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। ওই কদিন কীভাবে প্রশ্বাস নিতে হয়, আর নিশ্বাস ছাড়তে হয়, সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম। যন্ত্রণায় কাতরাতাম। যন্ত্রণা কমাতে অক্সিজেনের সঙ্গে মরফিন দেওয়া হত আমাকে।” রিয়া আরও জানান, “মাঝরাতে উঠে বসে থাকতাম শ্বাস নিতে। মনে হত আর হয়তো ভোর দেখতে পাব না। কিন্তু একমাত্র চিকিৎসক আর নার্সদের চেষ্টা আমি আবার বেঁচে ফিরেছি। ওরাঁই আসল হিরো।” চিকিৎসকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রিয়া।

আপাতত হাসপাতাল থেকে ফিরে বাড়িতেই রয়েছেন রিয়া। যদিও চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সেলফ আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। স্বামী, প্রিয়জন কারোর সঙ্গেই দেখা হচ্ছে না। রিয়া বলছেন, “এ আর এক যন্ত্রণা। প্রিয়জনদের কাছে থেকেও তাঁদের পাশে বসতে পারছি না। তাঁরা কাছে আসতে পারছে না। কবে যে আবার ওঁদের কাছে পাব কে জানে!”