ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কুমিল্লায় ঘাতক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে হয় ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী


৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৬

ছবি সংগৃহিত

কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নবম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পেটে ছুরি মেরে নদীতে ফেলে দেয় তার পাষন্ড প্রেমিক। দীর্ঘ ৬ মাস পর ওই লাশ সনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় জড়িত হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকারী ঘাতক প্রেমিক কুমিল্লা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট দায় স্বীকার করে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী কান্দুঘর গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের মেয়ে আয়শা আক্তার (১৫)কে খোজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে গত ৩ আগষ্ট তার মা সাজেদা খাতুন বাদী হয়ে কোর্টে একটি মামলা করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য কোর্ট ব্রাহ্মণপাড়া থানায় মামলাটি প্রেরণ করেন। মামলায় মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর গ্রামের আলী আজগরের ছেলে সিএনজি অটোরিক্সা চালক মোঃ জাবেদকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, জাবেদ আয়শাকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত এবং সে প্রায়ই কান্দুঘর তাদের বাড়ীতে আসা যাওয়া করত। তিনি অভিযোগ করেন, জাবেদ তার মেয়েকে ফুসলিয়ে মুরাদনগর নিয়ে গণধর্ষন করে লাশ ঘুম করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস গত জানুয়ারী থেকে বিভিন্ন থানায় উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত লাশের ছবি সংগ্রহ করে তদন্ত করতে থাকেন। গত ৪ মার্চ মুরাদনগর থানায় গোমতী নদীর পার থেকে অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে ওই ছবি মামলার বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের দেখালে তারা এ ছবির মেয়েটি আয়শা আক্তার বলে সনাক্ত করে। মামলার সূত্র ধরে মুরাদনগর থানা পুলিশ হত্যা মামলার আসামী জাবেদকে ৪ আগষ্ট গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করেছিল ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) আসামী জাবেদকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাবাদ করার পর এক পর্যায়ে সে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথাস্বীকার করে। পরে ২ সেপ্টেম্বর সোমবার জাবেদকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সামসুর রহমানের আদালতে হাজির করলে আদালতের নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্ধী দেয় জাবেদ।

জবানবন্ধীতে জাবেদ জানায়, আয়শার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে আয়শার পরিবারে তার যাতায়াত ছিল। সে ওই পরিবারে প্রায়ই আর্থিক সহযোগীতা করত। এর মধ্যে আয়শার মা তার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল। সে টাকা সে ফেরত চাইলে তার সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সে গত পহেলা মার্চ আয়শাকে ফুসলিয়ে মুরাদনগর নিয়ে যায়। সেখানে রাত ৮ টায় কুমিল্লা-সিলেট সড়কের কোম্পানীগঞ্জ ব্রীজের উপর টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার পেটে উপযুর্পরী ছুরিকাঘাত করে আয়শাকে ব্রীজ থেকে গোমতী নদীতে ফলে দেয়। ওসি তদন্ত সামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।