আবিরকে গলা কেটে হত্যার বিস্ফোরক তথ্য দিলো ৫ ছাত্র

চুয়াডাঙ্গায় মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনকে বলাৎকারের পর মাথা কেটে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। এ ঘটনায় মাদরাসার ৫ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য সামনে আসে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে- আনিসুজ্জামান (১৮), ছালিমির হোসেন (১৭) ও আবু হানিফ রাতুল (১৬) সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেছে, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফ ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালাতো। মারধরসহ ছাত্রদের দিয়ে শরীর ম্যাসেজসহ বলাৎকার করতো। ঠিকমতো খেতে দিতো না।
তারা বলেন, এ সব বিষয়ে আমরা (মাদ্রাসার ছাত্ররা) প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ানো হতো। বিষয়টি নিয়ে আমরা পাঁচজন শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফকে হত্যার পরিকল্পনা করি। পরে সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আমরা মাদ্রাসা ছাত্র আবিরকে হত্যার পরিকল্পনা করি। কারণ আবিরকে গ্রাম থেকে তামিম বিন ইউসুফ স্যারই মাদ্রাসায় নিয়ে আসে।
তারা জবানবন্দিতে আরও বলে, ২৩ জুলাই রাত ৮টায় আমরা পাঁচজন মিলে আবিরকে গল্প করতে করতে মাদ্রাসার পাশে আমবাগানে নিয়ে যাই। এরপর আনিসুজ্জামানসহ আমরা তিনজন তাকে বলাৎকার করি। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করি। হত্যার পর গুজব ছড়াতে আবিরের মাথা শরীর থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করে ছালিমির হোসেন। পরে মাথাটি পাশের পুকুরে ফেলে দেই। এরপর আমরা মাদ্রাসায় ফিরে যাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক জানান, রোববার রাতে ওই মাদ্রাসা ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আবির হুসাইনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আদালতের বিচারক হত্যার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে তাদের জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাই আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবির হুসাইন নিখোঁজ হয়। পর দিন সকালে মাদ্রাসার নিকটবর্তী আমবাগান থেকে তার মাথাবিহীন মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ জুলাই মাদ্রাসার কাছের একটি পুকুর থেকে আবিরের মাথা উদ্ধার হয়।