ঢাকা শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫, ২০শে বৈশাখ ১৪৩২

ধর্ষণ শেষে কোরআন শরীফে হাত রেখে দোযখের ভয় দেখাতো হুজুর


৭ জুলাই ২০১৯ ০৭:২৭

নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাওলানা আবুল খায়ের বেলালী পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সে এ পর্যন্ত ৮ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের পর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে মুখ না খুলে তার জন্য কোরান শরীফে তাদের হাত রেখে দোযখের ভয় দেখাতো। এভাবেই সে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ করতো।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দুয়া সদর উপজেলার বাদে আঠারবাড়ী মা হাওয়া (আঃ) কওমী মহিলা মাদ্রাসার মুহতামিম আবুল খায়ের বেলালী সিলেট বালুরচর কওমী মাদ্রাসা হতে একজন দাওরায়ে হাদীস অর্জনকারী মাওলানা। বেলালী একজন সুবক্তা, একজন ইমাম, শুক্রবারে জুম্মার নামাজের খতিব।

মাওলানা (!!!) আবুল খায়ের বেলালী ২০১৫ সাল থেকে কেন্দুয়ার বাদে আঠারবাড়ি এলাকায় মা হাওয়া (আ:) কওমী মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যে মাদ্রাসায় রয়েছে ৩৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রী। তাদের মধ্যে ১৫ জন আবাসিক। সেখানে তিনিও আবাসিক।

সময় সুযোগ বুঝে তিনি কলিংবেল চাপেন আর ওনার পছন্দমত একজন কোমলমতি ছাত্রীর ডাক পরে তার গা-হাত-পা টিপে দেবার জন্য। আর এক পর্যায়ে তিনি সেই অবুঝ শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণ শেষে আবার কোরআন শরীফ হাতে দিয়ে শপথ করান কাউকে কিছু না বলার জন্য, বললে কিন্তু আল্লাহ তোমাকে দোযখের আগুনে পোড়াবেন বলে ভয় দেখাতেন। ভয়ে কোমলমতি ছাত্রীরা কাউকে কিছু বলতেন না।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে ১১ বছর বয়সী এক কোমলমতি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন এবং তাকে কোরান শরীফে হাত রেখে শপথ করান।

কিন্তু বীরাঙ্গনা সেই কোমলমতি সাহসী শিক্ষার্থী ভয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়ী হয় এবং বলে দেয় সেই যন্ত্রনার মুহুর্তগুলোর কথা তার বড় বোনসহ বাড়ির লোকজন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকলকে।

স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক হন সেই হুজুররূপী ধর্ষক। থানায় আটক থাকা অবস্থাতেই আরো একজন শিশু তার উপর চালানো পাশবিক নির্যাতনের কথা থানা পুলিশকে জানায়।

কেন্দুয়া থানায় বেলালীর বিরুদ্ধে দুইটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া আরো জানান, শনিবার (৬ জুলাই) বিকাল ৩ টার দিকে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল ম্রং এর আদালতে উপস্থাপন করা হলে মাওলানা বেলালী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।


নতুনসময়/এমএন