ঢাকা সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


আশুলিয়ায় চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগের রমরমা ব্যবসা


১৭ জুন ২০১৯ ০২:৩৬

আশুলিয়ায় যখন গ্যাস সংকটে ভূগছে সাধারন মানুষসহ শিল্পকারখানা তখন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টাকার লোভে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে দিচ্ছে গ্যাস সংযোগ। ফলে একদিকে বৈধ গ্রাহকরা চাহিদানুযায়ী পাচ্ছে না গ্যাসের সেবা এবং সরকার হারাচ্ছে কোটি-কোটি টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে রাতারাতি কোটিপতি হন এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা।

প্রায়ই এসব অবৈধ সংযোগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও মিলছে না কোন ফল। দিনে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হলেও যথাস্থানে রাতেই আবার দিচ্ছে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ । ক্ষমতার দাপটেও কতিপয় বিশেষ কিছু মহলকে ম্যানেজ করে চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগের এই রমরমা ব্যাবসা।

সাভারের আশুলিয়ার ঘোষবাগ, নরসিংহপুর, মানিকগঞ্জপাড়া ও বেরণ এলাকা ঘুরে জানা যায়, এ পর্যন্ত একই সংযোগস্থলে অভিযান পরিচালিত হয়েছে বেশ কয়েকবার। তিতাস গ্যাস এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন (তিতাস) কোম্পানী দিনে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে যান। তা আবার এক শ্রেণী অসাধু ব্যবসায়ীরা টাকার বিনিময়ে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে সংযোগ দেয়। যেন দেখার কেউ নেই।

উচ্ছেদ অভিযান হলে প্রকৃতপক্ষে লাভের খাতার অঙ্ক ভারী হয় অসাধু গ্যাস ব্যবসায়ীরা । এক একটা আবাসিক সংযোগে পুনঃসংযোগ দিতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করনে বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে। মাসে মাসে রাইজার প্রতি ২ হাজার টাকা আদায় করছে। বিশেষ বাড়ি থেকে আবার ৫ হাজার টাকা তো থাকছেই।

এ অঞ্চল শিল্পাঞ্চল হওয়ায় রাতের আঁধারে সহজেই দিতে পারেন অবৈধ সংযোগ। আর রান্নার কাজের জন্য চাহিদার তুঙ্গে থাকায় বাড়িওয়ালারা ভাড়া বেশী পাওয়ার আশায় যেকোন মূল্যে বৈধ আর অবৈধ যাচাই না করেই অবাধে নিচ্ছেন এই গ্যাস সংযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার এক বাড়িওয়লা বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৫ বার লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষ। প্রতিবারেরই ৩০ হাজার করে টাকা দিয়ে নতুন করে সংযোগ নিয়েছি। ভাড়াটিয়ারা সবাই গার্মেন্টসে কাজ করে। তাদের সুবিধার জন্যই গ্যাসের লাইন নিতে হয়। আর গ্যাস লাইন না থাকলে বাড়ি ভাড়াও হয়না এখানে। তাই বৈধ গ্যাস পেলে আমরা উপকৃত হতাম।

মানিকগঞ্জপাড়া এক বাড়ির মালিক বলেন, প্রতিবার সংযোগ নেয়ার সময় মোটা অঙ্কের টাকা গুণতে হয়। আবার মাসে মাসেও দিতে হয় টাকা। তাই বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দিয়ে ভাড়াটিয়ার কাছ থেকেই টাকা তুলতে বাধ্য হন তিনি। অবৈধ সংযোগ নেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈধ না পাইলে কি করুম, চলতে তো হইবো।

এব্যাপারে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়)আবু শাহাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, আমরা এই অবৈধ গ্যাস ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার। নিয়মিত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু তারা রাতের আঁধারে আবার সংযোগ দিচ্ছে। অবৈধ গ্যাস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।