ছেলেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মায়ের আকুতি

নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেতে দীর্ঘ সাত বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারি গ্রামের এক মমতাময়ী মা। এই অপেক্ষার শেষ হবে কিনা তা নিয়েই চিন্তার ভাঁজ মায়ের কপালে।
শনিবার পিরোজপুর প্রেসক্লাবে আসেন ২০১২ সালে নিঁখোজ হওয়া কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আল মুকাদ্দাসের মা। মুকাদ্দাস পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাখুনিয়ারীর মাওলানা আব্দুল হালিমের বড় ছেলে।
সাংবাদিকদের হতভাগা ওই সন্তানের মা জানান, ২০১২ সালের ৪ ফেরুয়ারি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকাহ্ বিভাগের এলএলবি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আল মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ওয়ালীউল্লাহকে ঢাকার সাভার নবীনগরে র্যাব-৪ এর চেকপোস্টের সামনে থেকে হানিফ পরিবহন থেকে র্যাব পরিচয়ে নামিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ওয়ালীউল্লাহর আর কোন খোঁজ মেলেনি।
র্যাবের কাছে বারবার গিয়েও ছেলেকে পাওয়ার কোন আশ্বাস মিলছে না। মুকাদ্দাসের মা ঈদের আগে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্যে সাংবাদিকদের সামনে আকুতি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নিখোঁজ মুকাদ্দাসের মা এসময় বলেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী হানিফ পরিবহনের ৩৭৫০ নং এর সি-১ নং সিটে করে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা দেয়। সাভারের নবীনগরে স্থাপিত র্যাব ক্যাম্পের সামনে বাসটি থামিয়ে সাদা ও কালো পোশাকধারী ৮/১০ জন লোক মুকাদ্দাস ও তার বন্ধুকে নামিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তারা র্যাব-৪ ও ডিবি পরিচয় দেয়, যা পরে ওই বাসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ মাসুম মুকাদ্দাসের মাকে এ খবর জানায়। এ ঘটনায় ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দারুসসালাম থানা ও আশুলিয়া থানায় দুইটি জিডি করা হয়।
এরপর দীর্ঘ ৭ বছর ধরে পুলিশ, র্যাব ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও কোন আশ্বাস মেলেনি। মা হিসেবে তার কেবলই মনে হচ্ছে, তার ছেলে মুকাদ্দাস এখনও বেঁচে আছে। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঈদ-উল-ফিতরের আগেই ছেলেকে কোলে ফিরে পাবার আকুতি জানান। এসময় মুকাদ্দাসের চাচা মোহাম্মদ আব্দুল হাই ও ছোট ভাই মুকাররম হুসাইন উপস্থিত ছিলেন।
নতুনসময়/এনএইচ