পীরের পানি খেয়ে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু

পীরের পানি পড়া খেয়ে তানিয়া আক্তার নামের এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তানিয়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সরকারি কলেজের এইএইচসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
গতকাল শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে ওই পীরের আস্তানায় গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি পড়া খেয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। এর পরপরই পরিবারকে না জানিয়ে পীরের নির্দেশে সেখানেই তানিয়ার জানাজা পড়ানো হয়। এরপর লাশ নেওয়ার জন্য পরিবারকে খবর পাঠানো হয়। বিকেলে পরিবারের লোকজন এসে কাফন পরানো অবস্থায় তার লাশ নিয়ে যায়।
তানিয়া গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের অচিন্তপুর গ্রামের বড়বাড়ীর মো. বাচ্চু মিয়ার মেয়ে। তার চাচা মো. মহসিন আলী আকন্দ জানান, তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তিন বছর ধরে তানিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা চলছিল। একপর্যায়ে তারেরঘাট এলাকার ওই পীরের বাড়িতেও চিকিৎসার জন্য তাকে পাঠানো হয়। ওই পীরের কাছে যেকোনো রোগের চিকিৎসা চলে পানি পড়া ও লাঠির আঘাতে। সেখানে বেশ কিছুদিন ধরে যাচ্ছিল তানিয়া। পীরের নির্দেশে সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেওয়া প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়।
চাচা মহসিন আরো জানান, দুই মাস তানিয়ার ওই পীরের বাড়িতে যাওয়া বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার সে হঠাৎ তার মাকে জানায় ঈদের আগে শেষ শুক্রবার আবারও পীরের বাড়িতে যাবে। সকালে সে ওই পীরের বাড়িতে যায়। এরপর তার মোবাইল থেকেই তাদের কাছে তার মৃত্যুর খবর পাঠানো হয়। বিকেল ৩টার দিকে তিনিসহ তানিয়ার আরেক চাচা ও চাচি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাফন পরানো অবস্থায় লাশ নিয়ে যান।
এ সময় তাঁরা জানতে পারেন, তানিয়া প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অন্য রোগীদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পীরের ফুঁ দিয়ে রাখা পানি মাথায় ছিটিয়ে ও খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যায়। পীরের নির্দেশে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গোসল শেষে কাফন পরিয়ে জানাজা সম্পন্ন করা হয়। এ বিষয়ে জানতে পীর মো. লিয়াকত আলী খানের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নতুনসময়/এনএইচ