ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ভিক্ষুকের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার


২০ এপ্রিল ২০২০ ১৮:১১

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী রাহেলা বেগম (৬০) নামের এক ভিক্ষুকের কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মোস্তফা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা জানান, ইউপি সদস্য মোস্তফা বেগম প্রকল্পের সুবিধাভোগী ভিক্ষুক রাহেলা বেগমকে বরাদ্দ দেওয়া ঘর বুঝে পেতে তাঁকে টাকা দিতে হবে—এ কথা বলে ১৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ঘর বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হওয়ায় রাহেলা বেগম তাঁর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন।

অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গতকাল শনিবার বিকেলে এলাকা পরিদর্শনে যান এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ইউএনও ওই ইউপি সদস্যকে আটক করে উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় ইউপি সদস্য মোস্তফা বেগম টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। রাতেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মুশিউজ্জামান বাদী হয়ে আটক মোস্তফা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

ভৈরব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান রাশেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে এই উপজেলার জন্য ৩৬টি ঘরের বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে গজারিয়া ইউনিয়ন পায় ছয়টি। প্রতিটি ঘর তিন লাখ টাকায় নির্মাণ হচ্ছে। ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর স্ত্রী বৃদ্ধ রাহেলা বেগমের নামে একটি ঘর বরাদ্দ হয়, যাঁর পেশা ভিক্ষাবৃত্তি। এমন একজন অসহায় নারীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া খুবই দুঃখজনক।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরো বলেন, এ বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে নিজ নিজ ওয়ার্ডের নারী সদস্যদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। অভিযুক্ত এই নারী সদস্যের নামে আগেও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে দুবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ গোলাম সারোয়ার গোলাপ বলেন, ‘খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত নারী সদস্য মোস্তফা বেগমকে অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি জানিয়েছেন, বরাদ্দ ঘরটির কিছু কাজ বাকি আছে। বিল পেয়ে পরিশোধ করে দেবেন মর্মে তিনি ওই টাকা ধার হিসেবে নিয়েছিলেন।’