স্বামী আর সতিন পুড়িয়ে মারল মহিমা বেগমকে!

বরগুনার পাথরঘাটায় স্বামী ও সতিন মিলে মোসা. মহিমা বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন করে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাবা কবির তালুকদারকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ছেলে হেলাল তালুকদার। মামলার অন্য আসামিরা হলো কবির তালুকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচি বেগম ও বোন জামাই মো. সুজন। এর আগে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের রায়হানপুর গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। মৃত মহিমা বেগম বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের হোগলপাতি গ্রামের মৃত মকবুল মিস্ত্রীর কন্যা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে কবির তালুকদারের মেয়ে রেখা আক্তারের সাথে তার পিতার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচি বেগমের ছেলে সুজনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর বাবা কবির তালুকদারের সাথে রেখার শাশুড়ি এলাচি বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায় অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এ ঘটনা রেখা আক্তার দেখে ফেললে বাবার ওপর অভিমান করে বিষ পানে আত্মহত্যা করে রেখা। রেখা আক্তারের মৃত্যূ কয়েকদিন পরই কবির তালুকদার এলাচি বেগমকে দ্বিতীয় বিবাহ করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রায়হানপুর ইউনিয়নের রায়হানপুর গ্রামের আ. মাজেদ তালুকদারের ছেলে কবির তালুকদার, তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচি বেগম ও কবিরের মেয়ে-জামাই সুজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে কবির তালুকদারের বসতঘরে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে প্রথম স্ত্রী মহিমা বেগমের শরীরে প্রবাহিত বিদ্যুতের তার লাগিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যা করে। মৃত্যূ নিশ্চিত করে বসতঘরের পাশে একটি গাছের সাথে হেলান দিয়ে মরদেহ রেখে দেয় ঘাতকরা। পরে পুলিশ ঘটনা শুনে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনায় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার মহিমার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
মামলার বাদী হেলাল তালুকদার জানান, ঘটনার দিন সকালে বাবা কবির তালুকদার আমাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জানায় যে আমার শ্বশুর খুব অসুস্থ। আমার ছোট ভাই দুলাল তালুকদার ও আমার স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত শ্বশুর বাড়ি কালমেঘা ইউনিয়নে যাই। যাওয়ার পরেই পূর্বপরিকল্পিতভাবেই আমার মাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা ঢাকতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যূ হয়েছে বলে প্রচার করেছে।
ঘটনা নিশ্চিত করে পাথরঘাটা থানার ওসি মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ঘটনার শোনামাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। মামলার ভিত্তিতে প্রধান আসামি কবির তালুকদারকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আটক করার জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে।
নতুনসময়/এসএম