ঢাকা শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই সুন্দরী


১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:৩৮

ভূয়া লন্ডনী কন্যা সেজে ফেইসবুকের মাধ্যমে নতুন প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে এক তরুণী। নানা সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করে ফেসবুকে লন্ডনী কন্যা পরিচয় দিয়ে স্ট্যাটাস। বিভিন্ন যুবকদের আর্কষণ করে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।


ফেসবুকের মাধ্যমে ধর্ণাঢ্য পরিবারের যুবকদের সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলে প্রতারণা করছে। লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। একের পর এক বিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে। এখন পর্যন্ত ১০টি বিয়ের অভিযোগ থাকলেও ৩টি বিয়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।

১ম ও ২য় স্বামীর বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে একাধিক মামলা করেছে। লন্ডনী কন্যা সেজে বিয়ে করে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আত্মগোপণ করেছে।

মামলা ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা সদরের সোনাপুর গ্রামের তেরা মিয়ার কন্যা রিমা আক্তার রিতা লন্ডনী কন্যা সেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও মোবাইল ফোনে মাধ্যমে বিভিন্ন যুবকদের সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলে। নবীগঞ্জের মিঠাপুর গ্রামের এক ধনাঢ্য যুবক মৌলভীবাজার শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সর আহমদের সাথে মোবাইল ফোন ও যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লন্ডনী কন্যা রিমা আক্তার রিতার পরিচয় হয়। এরপর শুরু হয় দেখা স্বাক্ষাত। এতে প্রেমিক ফয়সর আহমদ রিতার প্রেমে মুগ্ধ হয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে এ বিষয়টি লন্ডনী কন্যার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে জানাযানি হয়। পরে দু’পক্ষের সম্মতিক্রমে লন্ডনী কন্যা পরিচয়দারী রিমা আক্তার রিতার মা পিয়ারা বেগম, মামা ফারুক মিয়া ও জাবেদ মিয়ার মাধ্যমে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়। বিয়ের পূর্বেই লন্ডনী কন্যার আত্মীয়-স্বজনরা প্রেমিক ফয়সর আহমদকে লন্ডন নেওয়ার খরচ বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এতে প্রেমিক ফয়সর বিয়ের আগেই নগদ ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করে। পরে গত জানুয়ারী মাসের ৯ তারিখ সিলেট নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ১লক্ষ টাকা দেনমহর নির্ধারণ করে ফয়সর আহমদ ও রিমার বিবাহ হয়।
এরপর শশুর বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে নব-দম্পত্তি হানিমুন করেন। কিছুদিন পর হঠাৎ করে লন্ডনী কন্যা রিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বামী মৌলভীবাজার শহরের শ্রীমঙ্গল রোডের একটি ডায়গনিস্টক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ধরা পড়ে।

এতে স্বামী ফয়সর আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। এর কিছুদিন পর চলতি বছরের ১৪ই মার্চ ফয়সর তার স্ত্রীকে বার বার কল দিলেও রিমা মোবাইল রিসিভ করে না। ফয়সর তার শশুর বাড়ি মৌলভীবাজার সোনাপুরে যায়। সেখানে তার স্ত্রীকে না পেয়ে ফয়েজ তার শাশুরিকে রিমার কথা জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, রিমা তো বাড়িতে নেই। আমরা তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। এ কথা শুনে স্বামী ফয়েজ হতাশ হয়ে পড়ে। পরে ফয়সর আহমদ এলাকার লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন, রিমা আক্তার রিতা কোন লন্ডনী কন্যা নয়। সে লন্ডনী কন্যা সেজে বিভিন্ন যুবকদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে এসব করছে।

এ খবরে স্বামী এফ আহমদ আরও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আবারও এফ আহমদ তার শশুর বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে রিমার আত্মীয় স্বজনদের সাথে লন্ডন নেওয়ার কথা বলে যে, ৫ লক্ষ টাকা সে দিয়েছিল তা ফেরত চাইলে তারা এফ আহমদকে শান্তনা দিয়ে বলেন, তুমি এ বিষয়টি কাউকে বলিও না। তোমার টাকা আগষ্ট মাসের ৩১ তারিখ আমরা দিয়ে দেব। এতে এফ আহমদ নিশ্চুপ হয়ে সেখান থেকে চলে আসে। তাদের কথা অনুযায়ী তারিখ মতো টাকা না পাওয়ায় পর আবারও ফয়সর আহমদ ঐ এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ মুরব্বিয়ানদের নিয়ে তাদের বাড়িতে গেলে নগদ ৫ লক্ষ টাকা ফেরত চাইলে রিতার আত্মীয়-স্বজনরা মারমূখী হয়ে উঠে। এ বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভূয়া লন্ডনী কন্যার আত্মীয় স্বজনরা টাকা আত্মসাতের জন্য নানা পায়তারা শুরু করে। এক পর্যায়ে ভূয়া লন্ডনী কন্যাকে আড়াল করে একের পর এক মিথ্যা মামলা করে। পরে ফয়সর আহমদ জানতে পারে এর আগেও রিমার বিয়ে হয়েছিল। সেই স্বামীর উপরও রিমার মামলা আছে। পরে ফয়সর আহমদ স্ত্রী ও তার আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার খবর পেয়ে আসামীরা বাদী এফ আহমদকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। এমন কথা শুনে বাদী মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়রি করে। ডায়রী নং ২৫৩।

নতুনসময়/আইকে