ঢাকা শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা, আসামিকে ধরছে না পুলিশ


১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৫৫

চাঁদার টাকা না দেয়ায় এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার ১ নং আসামি রফিক মোল্লাহর সাথে আবুল হাশেম মেল্লাহর সাথে জমিজামার বিরোধ নিয়ে আদালতে মামলা চলছিল। মামলা চলাকালীন হয়রানী করতে তার কাছে ২ লক্ষ্য টাকা চাঁদা দাবি করছিল রফিক মোল্লাহর ঘনিষ্ঠ মাগুরা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম আজম সজিবসহ মামলার অন্যান্য আসামীরা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জমি সংক্রান্ত মামলার রায়টি হাশেমের পক্ষে চলে আসলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রফিক মোল্লাহ। পরে বিএনপি নেতা সজিবকে সাথে নিয়ে নিজের পরাজয়ের প্রতিশোধের প্রস্তুতি নেয়।

হাশেমকে হত্যার হুমকি দিয়ে ২ লক্ষ্য টাকা চাঁদার র্অথ দিতে চাপ দেন বিএনপি নেতা গোলাম আজম সজিব। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৭ টার দিকে ভয়ে ২০ হাজার টাকা নিয়ে মুগুরা বাহারবাগ বাজারের পূর্ব পাশে পুকুর পাড়ে পৌছালে দেখা হয় বিএনপি নেতা সজিবের সাথে। সজিবের হাতে ২০ হাজার টাকা দিলে রাগে ক্ষোভে মুক্তিযোদ্ধা হাশেম মোল্লাহকে গালাগালী করতে থাকেন সজিব।

এরপর সজিব বলেন, “তোর কাছে ২ লক্ষ্য টাকা চেয়েছি। আর তুই দিচ্ছোস মাত্র ২০ হাজার টাকা ?” এ প্রশ্ন করেই সেখানে উপস্থিত আতর মোল্লাহ, রফিক মোল্লাহ, ইছাক মোল্লাহ, বাচ্চু মোল্লাহ ও শাহাদাৎ মোল্লাহকে নির্দেশ দিয়ে বিএনপি নেতা গোলাম আজম সজিব বলেন, শালায় আমাদের দাবী করা ২ লক্ষ্য টাকায় মাত্র ২০,০০০ টাকা দিয়েছে। ওরে জানে মেরে ফেল।”

এ কথা বলার সাথে সাথেই আসামিরা ওপর হামলা করে। তাকে হত্যার উদ্যেশ্যে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও হাত-পায়ে নির্মমভাবে কোপ দিতে থাকে। পরবর্তীতে হাশেম মোল্লাহর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সজিবসহ অন্যান্য দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত হাশেম মোল্লাহকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাশেম মোল্লাহর ছেলে ইমরান হোসেন জিকু মাগুরা জেলা আদালতে এ বিষয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বুলবুল ইসলাম এফআইআর হিসেবে মামলাটি গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পুলিশ রিপোর্ট দিলেও এ মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এ মামলার কয়েকজন আসামি আদালতে আত্নসমর্পন করে জামিন চাইতে গেলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে হাশেম মোল্লাহর ছেলে ইমরান হোসেন জিকু বলেন, এ ঘটনার হুকুমদাতা ও অন্যতম আসামি বিএনপি নেতা গোলাম আজম সজিবকে গ্রেপ্তারের কোনো চেষ্টাই করেনি পুলিশ। সে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। সজিব দীর্ঘদিন ধরে চোরাকাবারী ও কালোবাজারী করে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্থানীয়রা মানববন্ধন করে হাশেমের হত্যাচেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানালেও পুলিশ তা করেনি।

এদিকে মামলার বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাশেম জানান, মামলার এজাহারে কয়েকজন আসামি আদালতে আত্নসমর্পন করে জামিন চাইতে গেলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

মামলার অন্যতম আসামি জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বিএনপি নেতা গোলাম আজম সজিবকে গ্রেপ্তার না করা প্রসঙ্গে বলেন, এখানে কে কি তা বিবেচনা করা হচ্ছেনা। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নতুনসময়/আইকে