ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৫ই মে ২০২৫, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


পানি কমছে বাড়ছে দুর্ভোগ


২১ জুলাই ২০১৯ ১৯:৪০

ছবি সংগৃহিত

গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি ধীরগতিতে হ্রাস পেলেও করতোয়া নদীর পানি এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকায় বাঙালি নদীর পানির স্রোতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বন্যাকবলিত এলাকার পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশনের সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু নিজেদের খাদ্যই নয়। গবাদিপশুর খাদ্য নিয়েও তাদের সংকটে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে গেল দুই দিনে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ সুগার মিল এলাকায় মনু মিয়ার মেয়ে মুন্নি (৭) ও সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের জাহেদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতী খাতুন (১০) মারা গেছে। এ নিয়ে জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার জানান, ত্রিমোহিনী থেকে বোনারপাড়া স্টেশনসংলগ্ন এলাকার রেললাইনের ওপর দিয়ে পানিপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। ফলে লালমনিরহাট-সান্তাহার রুটে গাইবান্ধার ত্রিমোহিনী রেলস্টেশন থেকে বোনারপাড়া জংশন পর্যন্ত গেল বুধবার থেকে সকল ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ওইদিন থেকে ডাউন ট্রেনগুলো গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এবং আপ ট্রেনগুলো বোনারপাড়া পর্যন্ত চলাচল করছে। এদিকে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেস রংপুর-পার্বতীপুর-সান্তাহার হয়ে ঢাকায় চলাচল করছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নের ৩৮৩টি গ্রামের চার লাখ ৮৫ হাজার ৩০০ মানুষ এবং ৪৪ হাজার ৭৯২টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৮ হাজার ১০৪ জন লোক আশ্রয় নিয়েছেন।

আরও জানা যায়, বন্যায় ৫৭৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ২৩৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ, ২১টি কালভার্ট, ১০ হাজার ৮৩৩ হেক্টর আবাদি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

এদিকে বন্যার পানিতে ১৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৬৪টি মাদরাসা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ৯৪১টি পুকুরের মাছ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৭১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া করতোয়া নদীর পানি নতুন করে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার তিন সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।