ঢাকা রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


পরকীয়া প্রেমের টানে দুই সন্তানের জনকের হাত ধরে পালালো প্রবাসীর স্ত্রী


১১ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৭

পরকীয়া প্রেমের টানে দুই সন্তানের জনকের হাত ধরে পালিয়েছেন দুই সন্তানের মা। গত রবিবার (৬ জুলাই) টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২ বছর আগে আড়াইপাড়া গ্রামের আব্দুল গনি মিয়ার পুত্র মো. হায়দার আলীর (৩৫) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কালিয়া গ্রামের নুর মোহাম্মদের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের তাছনিম আক্তার (১১) নামের এক কন্যা সন্তান ও আলভী হোসেন তাওহীদ (৬) নামের এক ছেলে রয়েছে। হায়দার আলী জীবীকার প্রয়োজনে প্রায় ১০ বছর আগে কাতার চলে যান।

এই সুযোগে পাশের বাড়ির মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ভ্যান চালক (মুরগীর ব্যাপারী) শাহ আলম মিয়ার (৪৫) সাথে শারমিনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সর্ম্পকের জের ধরেই গত ৬ই জুলাই বিকালে লম্পট শাহ আলমের হাত ধরে পালিয়ে যায় শারমিন।

শারমিনের প্রবাসী স্বামী হায়দার আলী তাঁর এক বন্ধুর বরাত দিয়ে জানান, সংসারের অভাব দূর করতে এবং স্ত্রী-সন্তানের সুখের কথা ভেবে অনেক দিন যাবত বিদেশ পড়ে আছি। সেখানে শ্রমিকের কাজ করে মাসে ২০ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছি। প্রবাসে থাকাকালে বেশিরভাগ সময়ে স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দিয়ে তাকে ব্যস্ত পাই। কার সঙ্গে কথা বলছো জানতে চাইলে সে বলতো তার বাপের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেছে। জুন মাসের প্রথম দিকে শুনতে পাই আমার স্ত্রী শাহ আলমের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমি দেশে চলে আসি। তাঁরপর দুটি সন্তানের কথা ভেবে সামাজিকভাকে মীমাংসার মাধ্যমে তাঁকে ঘরে তুলে নেই। আমার বাড়িতে বৃদ্ধ মা ছাড়া অন্য কেউ না থাকায় পার্শ্ববর্তী গ্রাম কচুয়া ভায়রার বাড়িতে রেখে যাই, তাতেও আমার শেষ রক্ষা হয় না। সেখান থেকে সে আবার পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভালুকার চানপুর বড় ভায়রার বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে তার সেই প্রেমিক শাহ আলমের সাথে পালিয়ে যায়।

হায়দার আলী আরো জানান, আমার নিষ্পাপ দুটি সন্তান রয়েছে। ৬ বছরের সন্তানকে সাথে নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে চলে গেছে। যাওয়ার সময় প্রায় ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারগুলো নিয়ে গেছে। এখন তাকে আমি আর চাই না, আমার অবুঝ শিশুটিকে ফেরত চাই। এজন্য আমি এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সাহায্য চাই।

স্থানীয় সমাজকর্মী আজহারুল ইসলাম জানান, শাহ আলম এবং হায়দার আলী এলাকায় খারাপ চরিত্রের লোক হিসেবে সবাই জানে। কিছুদিন আগেও একবার দুইজনে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল, দুটি সন্তান ও সংসারটা টিকিয়ে রাখার জন্য সামাজিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আবার মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু হায়দার আলী বিদেশ যাওয়ার পর আবার এক মাসের মধ্যেই দুজনে চলে গেছে। প্রবাসী হায়দারের মা বাবা বৃদ্ধ হওয়ায় তারা কোথাও গিয়ে নালিশও করতে পারছে না তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সচেতন নাগরিক ফোরাম বাংলাদেশ সখীপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শরিফুল বাবুল বলেন, ঘটনা শুনেছি, আমাদের সমাজে এমন অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনাই ঘটছে। আসলে একজন প্রবাসী যখন এমন পরিস্থিতির শিকার হয় তখন তার সবাই থাকলেও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অভিযোগ করলে সমাজিক ও প্রশাসনিক সহায়তার আহ্বান জানাবো আর সচেতন নাগরিক ফোরাম বাংলাদেশ যে কোনো পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীর পাশে থাকবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাসেম মিয়া বলেন, এটা দুঃখজনক একটি ঘটনা। কিছুদিন আগে একবার মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। তাঁরপর আবার চলে গেছে। এ বিষয়ে তাদের আইনের সহায়তা নিতে পরামর্শ দিয়েছি।

সখীপুর থানা পুলিশের অফিসার-ইনচার্জ (তদন্ত) এইচ এম লুৎফুল কবির বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।