ঢাকা বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


স্ত্রীর দাবি নিয়ে সুজনের শোবার ঘরে সাথী


৩০ জুন ২০১৯ ০৬:২৩

স্ত্রীর দাবি নিয়ে পাবনার রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কর্মচারী সুলতান মাহমুদ সুজনের শোবার ঘরে অবস্থান নিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন সাথী।

সাবিনা ইয়াসমিন সাথী (২৫) নামের ওই তরুণী শনিবার বেলা ১১ টার দিকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করে সুজনের শোবার ঘরে অবস্থান নেন।

সুলতান মাহমুদ সুজন পৌরসভার চৌবাড়িয়ার দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রশিদ বাবলুর ছেলে। তার আগের স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন সুজন।

সুজনের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা সাবিনা ইয়াসমিন সাথী জানান, সুলতান মাহমুদ সুজনের সাথে তার রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়। যার দলিল নং৮৮/১৮। তারিখ ৯-১১-২০১৮।

কাবিননামা অনুযায়ী জানা গেছে, স্বর্ণের গহনা বাবদ ১ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বাকি ৫ লাখ টাকা দেন মোহরের বিনিময়ে সুলতান মাহমুদ সুজন ও সাথীর বিয়ে পাবনা জেলা জজকোর্ট উকিল ভবনে সম্পন্ন হয়।

প্রতারণার শিকার ওই নারী জানান, তার আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় পরে তিনি ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের হারোপাড়া মহল্লার বিশ্বাসপাড়ায় বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। একবছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে সুজনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে কর্মরত সুজন তাকে ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।

এরপর থেকে তারা দু’জন বিয়ে করে ঈশ্বরদীতে এক সাথে বসবাস করতে শুরু করেন। সুজন প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন করে তাকে বিয়ে করেন। মাস ছয়েক পর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানার পর ভাঙ্গুড়ায় বসবাসরত প্রথম স্ত্রী সুজনের বিরুদ্ধে মামলা করার উদ্যোগ নেয়। এ সময় সুজন সাথীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

সাথী জানান, সুজন তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেন। সব চেষ্টা বিফলে যাওয়ার পর তিনি নিরুপায় হয়ে শনিবার সুলতান মাহমুদের বাড়িতে এসে হাজির হয়েছেন।

সাথী আরো অভিযোগ করে বলেন, সুজনের বাড়ির লোকজন সাথী ও তার সাথে আসা মা শিল্পী খাতুনকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি দৌড়ে স্বামী সুজনের ঘরের দরজা বন্ধ করে নিরাপদে আশ্রয় নেন। কিন্তু সুজনের বাড়ির লোকজন সাথীর মা শিল্পী খাতুনকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে আহত করেছেন।

সাথীর মা শিল্পী খাতুনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামবাসী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে সুলতান মাহমুদ ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত সুজনের বাবা আব্দুর রশিদ বাবলু প্রবাসী। সুজনের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তার পরিবারের অন্যান্য অভিভাবক ও স্বজনরা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন না।

সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানার এস আই রাজু আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সুজনের স্ত্রী দাবি করা সাথী বা তার পরিবারের ওপর যেন কোনো হামলা না হয় সে জন্য সুজনের পরিবারকে সর্তক করেছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানান, বিয়ের নামে প্রতারণা করে আটমাস ধরে এক নারীকে ধর্ষণ করেছে তার মহল্লার বাসিন্দা সুজন। ন্যায় বিচার পেতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান না হলে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।