ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


যে কোরআনের ওজন ৫৫ কেজি


৯ অক্টোবর ২০১৮ ২০:৩১

ষাটের কোটা পেরিয়েছেন অনেক আগেই। তাই বলে ইতিহাসের অংশ হওয়া যাবেনা তা তো নয়! জীবনের ৩২টি বছর সাধনায় কাটিয়ে পবিত্র কোরআন লিপিবদ্ধ করার মহান কর্মযজ্ঞে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন নাসিমা আখতার (৬২) নামে এক নারী।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরাত অঞ্চলের বাসিন্দা এমন অধ্যাবসায় ও নিরন্তর সাধনার অধিকারীনি হলেন। তিনি তার আর্থিক, দীর্ঘ কায়িকশ্রম ও সাধনায় লিখিত পবিত্র কোরআনটি মসজিদে নববীর প্রাঙ্গণে অবস্থিত আল-কোরআন মিউজিয়ামে উপহার দিয়েছেন। এর আগে তার লেখা কোরআনের কপিটি পাকিস্তানের শীর্ষ স্থানীয় ওলামা-মাশায়েখের মাধ্যমে যাচাই-বাচাই করিয়েছেন।

টানা ১৫ বছর কলম দিয়ে মখমলের কাপড়ের ওপর কোরআনের আয়াত নিয়মতান্ত্রিকভাবে লিখে গেছেন নাসিমা আখতার। এরপর তিনি ১৭ বছর ধরে কোরআনের আয়াত লিখিত কাপড়গুলো সযত্নে সেলাই করেছেন। পরে গত ২১ সেপ্টেম্বর আল-কোরআন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে তা হস্তান্তর করেন নাসিমা আখতার।

আল-কোরআন মিউজিয়ামের মুখপাত্র ও জনসংযোগ ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান আল-বান্না বলেন, ‘১০ খণ্ডে লিখিত বৃহৎ এ কোরআনটি দেখলেই বোঝা যায়, তিনি এটির পেছনে কী পরিমাণ শ্রম-সাধনা ও সময় ব্যয় করেছে’।

১৯৮৭ সালের আগস্ট মাসে ৩০ বছর বয়সে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী গুজরাতের অধিবাসী এ নারী এভাবে কোরআন লিখতে শুরু করেন। ৩২ বছরের দীর্ঘ সাধনায় গত জানুয়ারিতে লিপিবদ্ধের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন।

৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের মখমলের কাপরে তিনি পবিত্র কোরআনের কপিটি লিখেন । আর পুরো কোরআনে ব্যবহৃত কাপড়ের দৈর্ঘের পরিমাণ ২৫ হাজার মিটার। ফলে পুরো কোরআনকে ১০ খণ্ডে এবং প্রতি খণ্ডে তিন পারা করে বিন্যাস করা হয়েছে। প্রতি পারা লিখতে খরচ করা হয়েছে ২৪ পৃষ্ঠা করে। তবে শেষ পারাটি লিখতে ব্যয় হয়েছে ২৮ পৃষ্ঠা। প্রতি পৃষ্ঠায় ১৫ লাইন করে কোরআনের আয়াত রয়েছে। বাঁধাইকৃত ও সুবিন্যস্ত কোরআনটির দৈর্ঘ্য ৫৬ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৩৮ সেন্টিমিটার। আর পুরো দশ খণ্ডের সম্মিলিত ওজন ৫৫ কেজি।

নাসিমা আখতার কোরআন লেখার মহৎ কাজটি করতেন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে এবং জোহর ও আছরের মধ্যবর্তী সময়ে। এছাড়াও পূর্ণাঙ্গ পবিত্রতা ও মনোযোগের সঙ্গে তিনি প্রতিটি আয়াত লিখতেন।

আইএমটি