ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


বিএনপির ঘাঁটিতে রোকেয়া প্রাচী ও শমী কায়সারের ‘দ্বন্দ্ব’


৪ নভেম্বর ২০১৮ ২২:০০

ফাইল ফটো

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশিদিন বাকি নেই। নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিভিন্ন আসনে তাদের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনতে শুরু করেছে। ফেনী- ৩ আসনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ কিছুটা বাড়তি প্রস্তুতি নিতে চাইছে। এই আসনটিকে বলা হয় বিএনপির ঘাঁটি। ইতিহাস বলে, এই আসনে জয়লাভ করা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য মোটামুটি অসম্ভব কাজ। কিন্তু এমন সংবেদনশীল একটি আসনেই দি তারকা মনোনয়ন প্রত্যাশী শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচীর দ্বন্দ্ব স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

ফেনী জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঁইয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-৩ আসনটি জাতীয় সংসদের ২৬৭নং আসন। এই নির্বাচনী এলাকায় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৫০ জন ভোটারের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়।

ফেনী- ৩ আসনটি বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত, এখানে আওয়ামী লীগের আসন বরাবরই নড়বড়ে। এই আসনে ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মাহাবুবুল আলম, ১৯৯৬ সালের ৭ম এবং ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোশারফ হোসেন এবং ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জয়লাভ করেন। মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন সেবার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৩৯ ভোট পান আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মো: আবুল বাশার ৯৩ হাজার ৬৩০ ভোট পেয়ে প্রায় সাড়ে ৪২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। বর্তমানে এই আসন থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম উল্লাহ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী ও শমী কায়সার।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ আটঘাট বেধেই নেমেছেন মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী। গত কয়েক বছর ধরে ফেনীতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় উঠান বৈঠক, নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে ‘স্বপ্ন সাজাই’ এর মাধ্যমে জনসচেতনা সৃষ্টিসহ সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন তিনি। এছাড়া ফেনী জেলা শ্রমিক লীগ রোকেয়া প্রাচীকে ইতিমধ্যে ফেনী-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছে।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারও। ‘এলাকার মেয়ে’ শমী কায়সার দীর্ঘদিন ধরে প্রচার-প্রচারণায় অংশ না নিলেও অল্প সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকবার নিজ বাড়ি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এলাকার রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তিনি। তাঁর সমর্থকদের দাবি, মনোনয়ন পেলে গণসংযোগসহ দলীয় কর্মকাণ্ডে শমী আরও বেশি সক্রিয় হবেন।

ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনে আওয়ামী লীগের অন্তত ডজন খনেক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। বেশ কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, শিক্ষা-সামাজিক সংগঠনে অনুদান, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, গরিব মানুষকে সহযোগিতাসহ যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন অনেকে।

একই আসনে দুই তারকা প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাশা স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংহতি বিনষ্ট করতে পারে বলে ধারণা করছেন এলাকার নেতাকর্মীরা।