ঢাকা শনিবার, ৩রা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২


বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন, নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন: ওমর ফারুক


১৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:৩৫

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন, নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ১০ অক্টোবর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা রাষ্ট্রীয় মদদে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর উদ্যোগে আজ ১৮ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন

ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে যে পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট হয়েছে যে, এই ঘটনার সাথে শুধু তারেক জিয়াই নয়, বেগম খালেদা জিয়া এবং পুরো বিএনপিই জড়িত ছিল। এজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ মনে করে ২১ আগস্টের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের জন্য বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে, তাদের সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে হাওয়া ভবনেই এই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সময়ে সরকার ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। তাই এই রায় থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে এই নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সাথে জড়িত।আর আদালতের রায়ে বলা হয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় এই ঘটনা ঘটানো হয়। তাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নির্দেশেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণেই খালেদাও গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত। রায়ে আরো প্রমাণিত হয়েছে ঐ গ্রেনেড হামলায় ক্ষমতাসীন বিএনপি সংগঠন হিসেবে জড়িত ছিল। বিএনপির প্রধান নেতা তারেক জিয়া এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। তাই সংবিধানের ৩৮ (গ) ধারা প্রয়োগ করে অবিলম্বে বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে নিষিদ্ধ করাই বর্তমানে রাজনীতি সচেতন জনতার মূল দাবি।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, আজ ১৮ অক্টোবর, শেখ রাসেলের জন্মদিন। শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে, এখন তিনি ৫৫তে পা রাখতেন। কিন্তু বাঙালি জাতির মানসপটে এখনো শেখ রাসেল শিশু। বাংলাদেশের শিশু অধিকার, বাংলাদেশের শিশুর রূপকল্প ভাবলেই শেখ রাসেলের মুখচ্ছবি আমাদের সামনে ভেসে ওঠে। একজন শিশু, মাত্র ১০ বছর ৯ মাস ২৭ দিন বয়সে ঘাতকের বুলেটে পৃথিবীর সব আনন্দ, সব ভালবাসা ত্যাগ করে চলে গেছে। কিন্তু শহীদ শেখ রাসেল যেন এখনো বেঁচে আছে, বাংলাদেশের সব শিশুদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে। সব শিশুদের জন্য রাসেল যেন এক উদ্দীপনা, অনুকরণীয় উদাহরণ। ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে যে অপশাসন সেই অপশাসনই শিশুদের বিকাশে অন্তরায় হয়ে আছে। স্বৈরাচারী একনায়ক জিয়াউর রহমান কেবল শেখ রাসেলকে হত্যা করেনি, এদেশের শিশুদের শৈশবকে হত্যা করেছে, তাদের ভবিষ্যতকে হতা করেছে। জিয়া শিশুদের খেলার মাঠে দালান বানিয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃত করে ভুল শিক্ষা দিয়েছে। শিশুদের বিনোদন ও সংস্কৃতিকে নিস্পেষিত করেছে বুটের তলায়। আজ তাই, মাঠহীন শিশুরা কম্পিউটার গেমস, ব্লু হোয়েলে আসক্ত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।

রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সুষ্ঠু বিকাশে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে সবচেয়ে ‘শিশুবান্ধব’ নেতাদের একজন এবং এর কারণ শেখ রাসেল। সরকার শিশুবান্ধব বাজেট করেছে, শিশুদের অধিকারে অগ্রাধিকার কর্মসূচি নিয়েছে। কিন্তু শিশুদের বেড়ে ওঠার মূল দায়িত্ব নিতে হবে পরিবারকেই। এখানে শেখ রাসেল হতে পারে সব পরিবারের জন্য ‘আলোক বর্তীকা’। রাসেল খেলতো, আমাদের শিশুদের হাতে মোবাইল না দিয়ে তাদের খেলতে দিন। রাসেল তার পরিবারকে খুব ভালবাসতো। আমাদের শিশুদের জন্য পরিবারকে আকর্ষণীয় করে তুলুন। এভাবে শেখ রাসেলের ছোট্ট জীবনটা পাল্টে দিতে পারে বাংলাদেশের সব শিশুর জীবন। তাই আজ এই জন্মদিনে, আমি সব পরিবারকে বলি, আপনার শিশুকে রাসেলের গল্প বলুন। দেখবেন সে ব্লু হোয়েলে আসক্ত হবে না, সে হতাশ হবে না, পরিবারকেন্দ্রীক এক অদম্য শিশু রাসেল। তার মতো করে সব শিশুকে বেড়ে উঠতে দিলেই আমাদের আগামী প্রজন্ম সুন্দর হবে।

যুবলীগ চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বইটি পড়ে বলেন, এটি কাপুরুষের জবানবন্দী। এস কে সিনহা ভারতে চিঠি পাঠিয়েছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে ভারতের বিজেপি মুসলিম হটাও আন্দোলন শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, নিস্ক্রিয় ও জনবিচ্ছিন্নদের নিয়ে জোট বাংলাদেশের জনগণের কি লাভ হবে।

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিএনপিকে নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচিসমূহ: ১। অবিলম্বে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় কার্যকর করতে হবে ২। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযান ৩। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবরে স্মারকলিপি ও সাক্ষাত ৩। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি ও সাক্ষাত ৫। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে নির্বাচন কমিশন বরাবরে স্মারকলিপি ও সাক্ষাত ৬। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মাননীয় প্রধান বিচারপতি বরাবরে স্মারকলিপি ও সাক্ষাত ৭। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বরাবরে স্মারকলিপি ৮। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বরাবরে স্মারকলিপি ৯। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বরাবরে স্মারকলিপি ১০। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট বলেন, টানা ১ মাস ব্যাপী বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কর্মসূচি দিয়েছে।বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী আজকে যে কথাগুলো বলেছেন, সে কথাগুলো বিশ্বাস করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ ।যুবলীগ চেয়ারম্যানের পরামর্শ অনুযায়ী কর্মসূচী পালন করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ

যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, অধ্যাপক এ.বি.এম আমজাদ হোসেন, এড. মোতাহার হোসেন সাজু, শেখ আতিয়ার রহমান দীপু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, হারুন-অর-রশীদ, নাজমুল হোসেন টুটুল, কামাল উদ্দিন খান, মাহবুবুর রহমান পলাশ, মোরসালিন আহমেদ, খোরশেদ আলম মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক জাফর আহমেদ রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহীম খলিল মারুফ, আরমান হক বাবু, এমদাদুল হক এমদাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু।