তাহলে বিডিআর হত্যার দায় সরকারের: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় থাকায় কারনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় যদি বিএনপির হয়, তাহলে বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ গুম-খুনের দায় বর্তমান সরকারকে নিতে হবে।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালে সংঘটিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দায় যদি রাষ্ট্রযন্ত্রের হয়, তাহলে বর্তমান সরকারের শাসনামলে পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, হলি আর্টিজানে হত্যাকাণ্ড এবং জঙ্গি হামলায় নিহত বিদেশি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, এনজিও কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইমাম-মোয়াজ্জিন, যাজক, পুরোহিত, ব্লগারসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষের হত্যাকাণ্ডের দায় ক্ষমতাসীনদের ওপরই বর্তায়। ‘কিন্তু গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে বিস্ময় প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় হামলা বলে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ের যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে, তা ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক বক্তব্যের হুবহু প্রতিফলন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, জেলখানায় চার জাতীয় নেতার বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মতো ঘৃণ্য অপরাধকে একইসূত্রে গাঁথার যুক্তি সঠিক হলে বিএনপি কিংবা বিএনপি পরিচালিত রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপরাধী বলা হলো কোন যুক্তিতে?
ফখরুল বলেন, ১৯৭৪ সালে বিএনপির জন্মও হয়নি এবং ১৫ আগস্ট কিংবা ৩ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের বিচারে কোনো আদালতই বিএনপি কিংবা বিএনপির কোনো নেতাকে অভিযুক্ত, এমনকি সম্পৃক্তও করেনি।
তাহলে ২১ আগস্টের ঘটনার বিচারের পর্যবেক্ষণে আগের দুটি ঘটনার উল্লেখ কতটা প্রাসঙ্গিক বলে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা সম্পূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ফরমায়েশি রায়। রায়ে দল বিশেষের রাজনৈতিক বক্তব্যের সঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ মিলে যাওয়া কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলেই জনগণ মনে করেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, হুজি নেতা মুফতি হান্নান দৈহিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখে যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন তা তিনি প্রকাশ্য আদালতে লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেয়ার পরেও তারই জবানবন্দিকে ভিত্তি করে তারেক রহমান এবং অন্যান্য বিএনপি নেতাকে অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়াটা কতটা মানবিক ও যুক্তিযুক্ত কিংবা আইনসঙ্গত হয়েছে তা উচ্চ আদালত বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে, তৎকালীন সরকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল না। কাজেই রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় হামলা হয়েছে বলে আদালতের যে পর্যবেক্ষণ-তা যুক্তিগ্রাহ্য কিংবা গ্রহণযোগ্য নয়।
আইএমটি