ঢাকা বুধবার, ২০শে আগস্ট ২০২৫, ৫ই ভাদ্র ১৪৩২


ফাগুনকে দ্বিগুণ করার ফুলকি এঁকেছিলেন জহির


১৯ আগস্ট ২০২৫ ২১:৫৬

সংগৃহীত

চলচ্চিত্রকে যদি আশ্চর্য এক আকাশ ধরা হয়, জহির রায়হান হলেন সেই আকাশের অন্যতম নক্ষত্র। যিনি ফাগুনকে দ্বিগুণ করার ফুলকি আঁকা শিখিয়ে জ্বলজ্বল করছেন আর্কটারাস তারার মতো। যিনি আদতে হতে চেয়েছিলেন চিত্রগ্রাহক কিন্তু পাকেচক্রে হয়ে গেলেন সাহিত্যিক, সাংবাদিক কিংবা রাজনৈতিক কর্মী। তবে তার চলচ্চিত্র নির্মাতা পরিচয়টিই সবচেয়ে রোশনাই ছড়িয়েছে।

 

চিত্রগ্রাহক হওয়ার নেশায় জহির প্রথমে কলকাতার প্রমথেশ বড়ুয়া মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট অব সিনেমাটোগ্রাফিতে ভর্তি হন এবং কিছুদিন পর সেই অধ্যায় শেষ না করেই ছেড়ে দেন। তবে হাতেকলমে তার চলচ্চিত্র শেখার পাঠ শুরু কিংবদন্তি নির্মাতা এ জে কারদারের কাছ থেকে। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘পদ্মানদীর মাঝি‘ অবলম্বনে নির্মিত ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ (১৯৫৯) চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন তিনি। সালাউদ্দিন নির্মিত ‘যে নদী মরু পথে’তেও (১৯৬১) সহপরিচালকের ভূমিকায় থাকেন জহির। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (প্রথমে অর্থনীতিতে, পরে বাংলা বিভাগে) থেকে পড়াশোনা শেষ করে নিজেই বানিয়ে ফেলেন সিনেমা।

 

তার প্রথম সিনেমা ‘কখনো আসেনি‘ (১৯৬১) বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ও ব্যতিক্রমী এক সৃষ্টিকর্ম। ‘কাঁচের দেয়াল‘ তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ। তৎকালীন দুই পাকিস্তানের প্রথম রঙিন সিনেমা ‘সংগম’ (১৯৬৪) এবং প্রথম সিনেমাস্কোপ সিনেমা ‘বাহানা’ (১৯৬৫) নির্মাণ করেন জহির। ১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আনোয়ারা‘ ও ‘বেহুলা‘ জহিরের হাত দিয়ে মালা হয়ে বেরোয়। ‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০) হলো এই চলচ্চিত্রকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা। ‘লেট দেয়ার বি লাইট’কে নিজের স্বপ্নের সিনেমা বলতেন জহির রায়হান। ১৯৭০ সালে আংশিক দৃশ্যধারণ হলেও ছবিটি শেষ করে যেতে পারেননি। সর্বমোট ১১টি সিনেমা তার হাত দিয়ে রুপালি জগতে স্থান করে নেয়।