লন্ডনের ফোন, মাহী কি করে জানেন?

রাজধানীর বারিধারায় বিকল্প ধারা সভাপতি বি. চৌধুরীর বাসায় যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বুধবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকে বিএনপি'র এক নেতা গোপনে মোবাইল ফোনে লন্ডনে সংযুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর উপস্থিত নেতাদের মোবাইল ফোন আলাদা কক্ষে রাখা হয়।
জানা গেছে, বৈঠক চলাকালে হঠাৎ বি. চৌধুরীর ছেলে মাহী বি. চৌধুরীর কাছে বাইরে থেকে ফোন আসায় তিনি বৈঠক থেকে বের হয়ে যান। একটু পরে আবার বৈঠক কক্ষে ঢুকে ইশারায় বি চৌধুরীকে বাইরে ডেকে নিয়ে যান তিনি। রুমের বাইরে বাবা-ছেলের কথোপকথন শেষে বৈঠক কক্ষে বি. চৌধুরী ও মাহি বি. চৌধুরী ঢুকে আমন্ত্রিত নেতাদের মোবাইল ফোন কক্ষের বাইরে রাখার অনুরোধ করেন।
কারন হিসেবে তারা বলেন, ‘উপস্থিত নেতাদের মধ্যে কোন একজনের মোবাইল লন্ডনের একটি ফোনে যুক্ত আছে।’ মানে হলো, বৈঠকের আলাপ আলোচনা লন্ডনে কেউ শুনছিলেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বি. চৌধুরী উপস্থিত সকলের সব ফোন বন্ধ করে বাইরে রেখে দেওয়ার জন্য বলেন। এরপর নেতাদের কাছ থেকে প্রায় ১০১২ টি ফোন পাশের কক্ষে এনে রাখা হয় এবং পরে সব ফোন বন্ধ করে দেয়া হয়। এভাবে কয়েক মিনিট চলার পর আস্থাহীনতায় বৈঠক স্থগিত করে দেন বি চৌধুরী।
এই ঘটনায় ওই বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাদের প্রশ্ন ‘বাইরে থেকে ফোন’ এলে মাহি জানতে পারেন, ‘উপস্থিত নেতাদের মধ্যে একজনের ফোন লন্ডনের একটি নম্বরে যুক্ত আছে।’ বাইরে থেকে ফোন করে মাহিকে এ তথ্য কে জানালো ?
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন নেতা জানান, কেবলমাত্র সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাই ট্রাকিং করে তাৎক্ষনিক জানতে পারে কার নম্বর কোথায় কানেক্ট করা আছে। তাহলে কি মাহির সাথে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ আছে?
ওই নেতা আরো বলেন, বিএনপি তো ঐক্য প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী দল। লন্ডনে বসে তারেক রহমান তো বৈঠকের আপডেট জানতে চাইতেই পারেন, কোনো পরামর্শ থাকলেও দিতে পারেন। তাহলে ‘কোনো একটি নম্বর লন্ডনের একটি নম্বরে যুক্ত আছে’ এমন খবর পাওয়ার পর সব মোবাইল সব নেতার কাছ থেকে নিয়ে একসাথ করে তা বন্ধ করে দেয়ার কারন কি ?
মাহির কাছে যারা ‘কোনো একটি নম্বর লন্ডনের একটি নম্বরে যুক্ত আছে’ মর্মে খবর জানিয়েছে, তাঁরাই কি মোবাইল বন্ধ করে দিতে বলেছে? নাকি মাহি তাদের বাড়িতে শক্তিশালী কোন ট্রাকিং ডিভাইস লাগিয়েছে। তার মাধ্যমে হয়তো ঐ তথ্য সে পেয়েছে। বি চৌধুরী বা তার ছেলে মাহি কি জোট নেতাদের বিশ্বাস করেন না ? বৈঠক চলাকালীন ঐ ডিভাইস চালু করে রেখেছিলেন কেন ? যারা নিজেদেরকেই নিজেরা বিশ্বাস করতে পারেনা, জনগন বাপ ছেলেকে বিশ্বাস করবে কেন? এমন অসংখ্য প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের মধ্যে।
যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বারিধারার বাসায় যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা ওই বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন থাকবেন না জানার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি। বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
আরকেএইচ