ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


আপনার বাবার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন মোস্তাক, প্রধানমন্ত্রীকে আলাল


১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:১২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান খন্দকার মোশতাকের ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন’। এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মেয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, খন্দকার মোস্তাক কার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন? আপনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি যে আপনার বাবার ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন সেটা আগে বলেন। তার পরেরটা মিথ্যা হলেও সেটা মেনে নিবো।

তিনি বলেন, আজকের সমগ্র জাতির চোখে ধুলো দিয়ে প্রতারণা ও মিথ্যা বলার চক্রান্তে সেরা এই সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ লড়াই ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে কিনা এ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাংলাদেশের মানবাধিকার, বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনার মুক্তির সঙ্গে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবি আজকে সমান্তরালভাবে চলছে। একটিকে বাদ দিয়ে আজকে আরেকটি চিন্তা করা সম্ভব নয়। তাই বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য প্রকৃতপক্ষে যদি আমরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নামি তবেই কেবলমাত্র তাকে মুক্ত করা সম্ভব। রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলাল বলেন, বিএনপি না করেও যদি নির্যাতিত হতে হচ্ছে ড. কামাল হোসেনকে। যিনি বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করেছেন তার উপরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে হামলা হয়। যদি বিএনপি না করেও দেশ ছাড়তে হয় বিচারপতি এসকে সিনহাকে, যদি অত্যাচারিত হতে হয় মাহমুদুর রহমানকে, বিএনপি না করেও আলোকচিত্রি শহিদুল হককে কারাগারে যেতে হয়, বিএনপি না করেও যদি ব্যারিস্টার মঈনুলকে আদালতে লাঞ্ছিত হতে হয়। সেই দেশে এই সরকার এখনো মুক্তিযোদ্ধের ধোয়া তোলে, জিকির তোলে। তিনি বলেন, চৌধুরী সাহেবদের বিবেক জাগ্রত হয়েছে আর যাদের বিবেক জাগ্রত হওয়ার কথা তারা তাদের বিবেককে কবর চাপা দিয়েছে বলেই আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে সরকার কর্তৃক গেজেট আকারে ১০৭৬৯ জন রাজাকারদের তালিকা করা হয়েছে। আর গাফফার চৌধুরী আজকে বলছেন সেই রাজাকার নাকি প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশে এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের মধ্যেও আছে। তিনি আরো বলেছেন, আমি তাদের নাম বলব না তাহলে আমি আর বাংলাদেশে আসতে পারবো না আমাকে এদেশে আর আসতে দেওয়া হবে না। তিনি এও বলেছেন তার দুঃখ লাগে আজকের রাজাকাররা বসে বসে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করেন।

যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের শৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখে দালাল মুক্তিযোদ্ধাদের বিবেককে বিক্রি করে দেশে যে অনাচার সৃষ্টি করেছে আজকে বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় তা বলতেও আমাদের ঘৃনা লাগে। আজকে বাংলাদেশের যে সরকার এই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল চেতনা সাম্য, মানবিক, সামাজিক ন্যায়বিচার এর বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারের ন্যায় দেশ পরিচালনা করছে। স্বৈরাচার হচ্ছে তোর জন্য মুক্তিযোদ্ধার আবির্ভাব হয়েছে। যে কারণে আওয়ামী লীগ নামক মেশিনের এ পাশ দিয়ে রাজাকার দিলে ওপাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বের হয়। আর আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বললে সে রাজাকার হয়ে যায়। এই হচ্ছে বর্তমান সরকার। তাদের সাথে কোন আপোষ চলতে পারে না।

তিনি বলেন, এই সরকার আজকে আমাদের মানুষদেরকে নাগরিকপঞ্জি নামে প্রতিবেশী দেশ থেকে জোর করে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সরকার সেটা বলতে পর্যন্ত সাহস পাচ্ছে না, বলা হচ্ছে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা তাদের শুধু দেখি ওবায়দুল কাদেরের কাউয়া তত্ব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে এবং প্রধানমন্ত্রীর উল্টাপাল্টা ক্লাব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ন মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদল সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারন সম্পাদক সাদেক খান, ওলামা দলের আহ্বায়ক কাজী নেসারুল হক, মৎসজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।